রাহেবুল ইসলাম টিটুল লালমনিরহাট।
এবার কাঁচা, আধপাকা ধানের ক্ষেত কেটে খড় হিসেবে বিক্রির ধুম পড়েছে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে তবে ধানের চেয়ে খড়ের দাম বেশি!
উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়ন বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী ভিত্তিতে জমে উঠেছে ‘খড়ের হাট’। তবে ব্রিধান আর বিনাধান চাষি কৃষকরা পেলেন দ্বিগুণ লাভ। গরুর খাদ্য সংকটে আছেন কৃষক ও খামারিরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানায়, কালীগঞ্জ উপজেলায় ৮ টি ইউনিয়নে কৃষকপর্যায়ে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার গরু ও প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার
ছাগল রয়েছে। উপজেলার দুগ্ধ খামার ২৪টি রয়েছে।
উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের কালীগঞ্জ বাজারে দেখা হয় কৃষক রবিউলের। তিনি জানান, তার ৩৫ শতাংশ জমিতে মাত্র ৮ মণ ধান হয়েছে। তবে এ জমির খড় বিক্রি করেছেন প্রায় ১০ হাজার টাকা। ধানের চেয়ে খড়ের মূল্য বেশি।
দলগ্রাম ইউনিয়নের তালুক মদাতী গ্রামের কৃষক সহিদুল হক জানান, বাজারে গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত বোরো মৌসুমে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে অধিকাংশ কৃষক গোখাদ্য খড় সংগ্রহ করতে পারেনি। তাই এবার গোখাদ্যের জন্য কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের শিয়াল খাওয়া বাজারে কথা হয় সাজু মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, ৩-৪ কেজি ওজনের খড়ের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৮ টাকা ১০ টাকা দরে।
মদাতী ইউনিয়নের মধুর বাজকর গ্রামের কৃষক মো. আব্দুর রউফ জানান, ১১ শতাংশ জমিতে ধান হবে ৩ মণ। কাটতে লাগে ৭শ টাকা। ধান বিক্রি করে পাব ২ হাজার ৪শ টাকা। এখন ক্ষেতের খড় বিক্রি করে দিয়েছি ৩ হাজার ৪শ টাকা। ধানের চেয়ে খড়ের মূল্য বেশি পেয়েছি।
এদিকে কাকিনা ইউনিয়নের কৃষক আবুল হোসেন জানান, গোখাদ্যের আকাল দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়েই মানুষ বেশি দাম দিয়ে খড় কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
অপরদিকে চলবলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে রাতের আঁধারে কৃষকের আধপাকা ধান কেটে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাহামুদা খাতুন
জানান, এ বছর আমন মৌসুমে কালীগঞ্জে
চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে।
তবে, বন্যা পরবর্তীতে সময়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি সম্প্রসারণের পক্ষ থেকে চাষিদের আগাম ধান চাষে পরামর্শ প্রদান করা হয়। উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ হাজার হেক্টোর জমিতে বিধান-৭১ এবং ৭৫ জাতের ধান আবাদ হয়েছে।
কৃষকরা এ ধান আবাদ করায় একই জমিতে ৩ ধাপে চাষাবাদ করতে পারছে। তারা এবার দ্বিগুণ লাভ করেছেন। ধানও পেয়েছেন আর উচ্চমূল্যে খড় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।