অনলাইন রিপোর্ট
জোড়া মাথার শিশু রাবেয়া ও রোকাইয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাঙ্গেরি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশু দুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। রাবেয়া-রোকাইয়াসহ পরিবারের ছয়জন আজ শুক্রবার রাতে হাঙ্গেরির উদ্দেশে রওনা হবে। সঙ্গে যাবেন বার্ন ইউনিটের রাবেয়া-রোকাইয়ার চিকিৎসক হোসাইন ইমাম।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাবেয়া-রোকাইয়াকে হাঙ্গেরি নেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হাঙ্গেরিতে চিকিৎসার জন্য দেওয়া অনুদান শিশুদের মা-বাবার হাতে তুলে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
এসময় নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাস্তব অর্থেই মানবতার নেত্রী। তিনি চিকিৎসক ও রাবেয়া-রোকাইয়ার বাবা-মাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওদের চিকিৎসার সাফল্য কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন জানান, বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরির যৌথ উদ্যোগে রাবেয়া-রোকাইয়ার চিকিৎসা হবে। সেখানে হাঙ্গেরি, জার্মানি ও বাংলাদেশের পাঁচটি দলের ২০ সদস্য কাজ করবেন।
তিনি জানান, ২০১৭ সালের নভেম্বরে রাবেয়া-রোকাইয়াকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তখন বাংলাদেশে জার্মানি ও হাঙ্গেরির প্রতিনিধিদল ছিল। দুই বছর সাত মাস বয়সী এ শিশু দুটির বাংলাদেশে এর আগে মস্তিষ্কের রক্তনালীতে দুবার অস্ত্রোপচার করা হয়। হাঙ্গেরি থেকে ফেরার পর দেশে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ওদের মূল অস্ত্রোপচার হবে।
এসময় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, রাবেয়া–রোকাইয়ার মস্তিষ্ক আলাদা। কিন্তু ওদের পুরোপুরি আলাদা করার জন্য টিস্যু বাড়াতে হবে। এ ছাড়া আরও কিছু চিকিৎসার জন্য ওদের হাঙ্গেরি নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে এ ধরনের চিকিৎসায় সফলতার হার ২০ শতাংশের কম। যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হাঙ্গেরিতে রাবেয়া-রোকাইয়াকে তিন থেকে চার মাস থাকতে হতে পারে। সেখানে ‘ফর বাংলাদেশ’নামে হাঙ্গেরিভিত্তিক একটি বাংলাদেশি সংগঠন শিশু দুটির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকবে।
উল্লেখ্য, পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলংকা গ্রামের স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা দম্পতির ঘরে জন্মগত ত্রুটির কারণে জন্ম নেয় রাবেয়া ও রোকাইয়া নামে যমজ দুই মেয়ে শিশু।
শিশু দুটিকে প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করার পর স্থানীয় সংসদ সদস্যের নজরে পড়লে তিনি শিশু দুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।