ঢাকাThursday , 24 September 2020
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দূর্নীতিঃ
  3. আইন – আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খেলাধুলা
  7. জাতীয়
  8. নির্বাচন
  9. বিনোদন
  10. মুক্ত কলাম
  11. রাজনীতি
  12. লালমনিরহাট
  13. লিড নিউজ
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য

স্বপ্ন ছারা সফলতার কল্পনা করা নিছক মূর্খতা’ মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়, রাকিবুজ্জামান আহমেদ

TITUL ISLAM
September 24, 2020 4:07 pm
Link Copied!

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক কবিতায় বলেছেন,

আজ একেলা বসিয়া, আকাশে চাহিয়া,
কী সাধ যেতেছে, মন!
বেলা চলে যায় — আছিস কোথায়?
কোন স্বপনেতে নিমগন?

এই সুন্দর পৃথিবীতে একজন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল সুস্থ্য থাকা। যে মানুষটি আজ সুস্থ্য ভাবে বেঁচে আছে সে কোনো না কোনো ভাবে একটি বা একাধিক স্বপ্নকে সামনে রেখেই বেঁচে আছে। স্বপ্ন দেখতে হয়। স্বপ্ন দেখাতে হয়। স্বপ্ন পূরণ হয়। যদি তা হৃদয়ে লালন করা যায় । আর স্বপ্ন বড় করেই দেখতে হয়। স্বপ্ন যদি বড় হয় ছোট স্বপ্নগুলো এমনিতেই বাস্তবায়ন হয়। মানুষের হৃদয় মিনারে বেঁচে থাকা সমাদৃত ও বরণীয় হয়ে অন্তরে সৃষ্ট ধ্বনী তোলার জন্য প্রয়োজন সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখা। স্বপ্ন ছারা সফলতার কল্পনা করা নিছক মূর্খতা। মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।

আমাদের স্বপ্ন যত বড় আমরাও তত বড়। স্বপ্ন যদি আমাকে ঘুমাতে না দেয় আমাকে জড় পদার্থের মত বসিয়ে না রাখে তাহলে আমাদের স্বপ্নরা বাস্তবতার নিশানই উঠাতে পারবে বলে আমরা বিশ্বাস করতে পারি। আমাদের সমাজে একটি নীতিবাচক কথা রয়েছে যে, স্বপ্ন সবার দেখা সাজে না। তারা অনেকে মনে করে স্বপ্ন মানেই একটি নিছক কল্পনা মাত্র। কিন্তু আসলে বিষয়টি তা নয়।

স্বপ্ন মানে বাস্তব। স্বপ্ন মানেই গন্তব্য। আমি কি করতে চাই ।কোথায় যেতে চাই ।তার নাম স্বপ্ন। আমাদের ব্যর্থতার পেছনে অন্যতম একটি কারণ নতুন প্রজন্মের স্বপ্নের সীমাবদ্ধতা। ছোট ছোট কাজের সমষ্টিই জীবন। প্রতিটি চিন্তা কিংবা প্রতিটি স্বপ্ন প্রভাবিত করে জীবনকে। তাই জীবনের লক্ষ্য পূরণে স্বপ্ন দেখতে হবে। স্বপ্ন দেখাতে হবে। আর সেই স্বপ্নটি হবে বাস্তবতার চেয়ে বড়। বাস্তব স্বপ্ন ও তার পেছনে পরিশ্রম ও সাধনা কখনোই ব্যর্থ হয় না। স্বপ্নকে বিশ্বাসে রূপান্তরিত করতে পারলে না অর্জন করা সম্ভব।

নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছেন, বড় স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পথে ছোট ছোট অর্জন গুলোকেও মূল্য দাও।

আপনি কি করতে পারেন? আপনার কি করতে ভালো লাগে? আপনার পছন্দের বিষয়গুলো কি কি? আপনি নিজেকে ১০ বছর পর কোথায় দেখতে চান? সেই জায়গায় নিজেকে পাওয়ার জন্য আপনি কোন কাজটি করছেন? আজকে আপনার ভাবনা ও কাজ আপনাকে আগামীদিনের ভূমিকায় রাখতে পারবে তো? ভেবেছেন? এই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে। পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। নিজেকে তৈরি করতে হবে। আর এই সবের জন্য বাস্তব সম্মত করে সুন্দর স্বপ্ন সাজাতে হবে। স্বপ্নহীন মানুষ বিভ্রান্ত।

জীবন নদীতে সে হয় মাঝিহীন নৌকার মত। নদীতে নৌকা যেমন এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করে। কিন্তু তীরে ভিড়তে পারে না তেমনি মানুষ হোঁচট খেতে খেতে এগিয়ে যায় তবে যেহেতু তার কোনো গন্তব্য জানা নেই তাই কোথাও ঠিকমত পৌঁছাতে পারে না। আমাদের সমাজের অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বপ্নের মৃত্যু হয় এভাবেই। আমার চাইলেই ছোট ছোট উদ্যোগ নিয়ে তরুণদের জন্য ভাবতে পারি। সফলতার ও অনুপ্রেরণার গল্প শুনিয়ে খুব সহজেই তাদের মনকে বদলে দিতে পারি। আর এধরনের একটি গল্পেই বদলে যেতে পারে তাদের জীবন। আর এতে করে বহু স্বপ্ন দেখা হতাশ একজন তরুণ আশান্বিত হয়েছে।

মাদকের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা একটি ছেলে মাদককে না বলেছে। জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়া একটি ছেলে নতুন করে জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছে।অপরাধজগত থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করেছে। স্বপ্ন দেখা ও এর পিছনে চেষ্টা কখনো ব্যর্থ হয় না। ভ্রাতৃদ্বয় স্বপ্ন দেখতেন আকাশে উড়ে বেড়াবেন। এমন এক যন্ত্র বানাবেন যাতে করে আকাশে উড়া সম্ভব। তারা তৈরি করলেন প্লেন। ইতালির বিজ্ঞানী গুগলিয়েমো মার্কনি স্বপ্ন দেখতেন স্রষ্টার শক্তিকে জড়ো করে কাজে লাগাবেন। তিনি সে ভুল স্বপ্ন দেখেননি। তার প্রমাণ বেতার। টেলিভিশন আবিষ্কার। আসলে বাস্তবে পরাজয় স্বীকার না করলে কেউ পরাজিত হয় না।

মানুষের প্রতিটি অগ্রগতি বাস্তব হওয়ার পূর্বে তা কল্পনায় গড়ে উঠেছিলো ছোট ছোট আবিষ্কার। চিকিৎসার নতুন খোঁজ। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিস্ময়। ব্যবসায় সফলতা। এসব সত্যি হয়ে উঠার পূর্বে তা ছিলো স্বপ্ন মাত্র। আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে আছে সফল হওয়ার অসংখ্য গল্প। সেগুলোকে আলিঙ্গন করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। নতুন প্রজন্মকে স্বপ্নের পরিধি বাড়াতে হবে। স্বপ্ন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের গতানুগতিক ধ্যান ধারনা ও দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। একজন মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হলো আমাদের রব আল্লাহকে খুশি করা। আর আল্লাহকে পেতে হলে তাকে রাজি খুশি করতে হলে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, যারা আমার উদ্দ্যেশে চেষ্টা সংগ্রাম করবে তাদের আমি পথ দেখাবো। আর আল্লাহ সহনশীল মানুষের সঙ্গে রয়েছেন। (সুরা আল কাবুত-৬৯)

মহান আল্লাহ বান্দাকে শিক্ষা দিয়েছেন তাকে পাওয়ার পথ ও পদ্ধতি। আল্লাহকে পেতে হলে তার সঙ্গে হৃদ্যতা গাঢ় করতে হবে। তার হুকুম পালন করতে হবে। তার স্মরণে উৎসর্গ করেত হবে জীবন ও জীবনের সব কিছু। আল্লাহ বলেন, তুমি তোমার রবের নাম স্মরণ করতে থাকো এবং একমাত্র তার দিকে মনোনিবেশ করো। (সুরা মুজাম্মিল-৮)

মুসলমানদের প্রধান স্বপ্ন হলো জান্নাত। আর জান্নাতকে দুঃখ কষ্ট দ্বারা আড়াল করে রাখা হয়েছে। সুতরাং জান্নাতে যেতে চাইলে চেষ্টা সাধনায় নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে। রাতদিন পরিশ্রম করে যেতে হবে জান্নাতের উপকরণ সংগ্রহে ।হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, জান্নাতকে লোভনীয় জিনিস এবং দুঃখ কষ্ট দ্বারা আড়াল করে রাখা হয়েছে। (সহহি বোখারী-সহিহ মুসলিম সূত্রে রিয়াজুস সালিহীন-১০১)

সূর্যের মত দ্বীপ্তিময় হতে হলে প্রথমে তোমাকে সূর্যের মতই পুড়তে হবে। যে স্বপ্ন দেখে উজ্জলতার ভব্যতার মরে গিয়ে বেঁচে থাকার তাকে জলাঞ্জলি দিতে হবে জীবনের কাছে জীবনকে। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি স্বপ্নের কথাগুলো মানুষকে বলতে হবে । তবে এখানে দুটি ঘটনা ঘটবে। দেখবেন কেউ বা কাহারা আপনার স্বপ্ন নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করবে। আবার কেউ আপনার স্বপ্ন পূরণে আপনাকে উৎসাহ দিবে। অন্যের দেয়া উৎসাহ আপনাকে সামনে চলতে অনুপ্রেরণা যোগাবে। তখন আপনার স্বপ্ন আপনাকে আর থামতে দিবে না। বিশ্রাম দিবে না। এমনকি আপনাকে ঘুমাতেও দিবে না।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী এ পি জে আব্দুল কালাম বলেছেন, স্বপ্ন সেটা নয় যেটা মানুষ, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে; স্বপ্ন সেটাই যেটা পূরণের প্রত্যাশা, মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।

আবার অন্যদিকে যারা জীবনে কখনও বড় বা সুন্দর স্বপ্ন দেখে না বা কখনও সমাজে কোনো ভালো কাজ করে দেখাতে পারেনি। সমাজে কারও উপকারে আসতে পারেনি। যারা অন্যের ভালো কাজ দেখে অন্যের অমঙ্গল কামনা করে হিংসা করে অনর্থক অন্যের সমালোচনা ও বিরোধীতা করে তারা আপনাকে ভয় দেখাবে। নিরুৎসাহিত করবে এবং আপনাকে পিছন থেকে ক্ষতি করার চেষ্টা করবে। মজার বিষয় হচ্ছে

যদি কেউ বড় স্বপ্ন দেখে তা কাউকে বললে বা তার কর্মে তা প্রকাশ পেলে স্বপ্ন দেখা মানুষটি সব চেয়ে বেশি নিরুৎসাহিত বা সমালোচনার শিকার হতে পারে তার কাছের আত্মীয়স্বজন ও তার কিছু প্রিয় মানুষের দ্বারায়। এমনকি অনেক সময় ক্ষতিরও শিকার হতে পারেন।তাহলে উপায়? আপনি সাহসি হোন। বিবেকবান হোন। আপনার বড় ও সফল হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়গুলো চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যান। তাহলে এমন কোনো অপশক্তি নেয় যা আপনাকে থামাতে পারে।

সফল ও বড় হওয়ার জন্য ভালো মানুষের সান্নিধ্যে থাকতে হবে। সফল হওয়ার জন্য আপনার দেখা স্বপ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বপ্ন কিন্তু অনেক সময় চুরি হয় তা কি জানেন? আপনার দেখা স্বপ্নটি কখনো যেনো চুরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। স্বপ্ন চুরি হলে আপনি নিরুৎসাহিত হবেন। আর স্বপ্ন কিন্তু আপনার আশেপাশের কাছের মানুষরাই বেশি চুরি করে। আমাদের জীবনকে সুন্দর স্বার্থক ও সাফল্যমণ্ডিত করতে হলে সময়কে কাজে লাগাতে হবে। জীবনকে উপলব্ধি করে তার কাছ থেকে সফলতার পাঠ নিতে হবে। সময় ও স্বাস্থ্যকে এক সঙ্গে নিয়ে জীবনকে পৌঁছে দিতে হবে সফলতার স্বর্ণ শিখরে। সময় ও স্বাস্থ্য আল্লাহর বড় নেয়ামত। মুহাম্মদ (সা.) বলেন, দুটি নেয়ামত আল্লাহর দান। যার ব্যাপারে বহুলোক ক্ষতিগ্রস্থ। (সহিহ বোখারি হাদিস ৬৪১২,সুনানে তিরমিজি হাদিস-২৩০৪)

সময় ও স্বাস্থ্য আমাদের অনুকূলে থাকার পরও যদি জীবন সুন্দর না হয়, সুখ না হয়, স্বপ্ন পূরণ না হয় তাহলে আমাদের বেঁচে থাকা নিরর্থক।

বেঁচে থেকে যারা জীবনকে উজ্জ্বল আলোয় প্রদীপ্ত করছে তারাই সর্বোত্তম মানুষ। হাদিস শরিফে এসেছে, সেই ব্যক্তি উত্তম যার বয়স দীর্ঘ ও কাজ সুন্দর। (সুনানে তিরমিজি সূত্রে রিয়াজুস সালেহিন-১০৮)

স্বপ্নকে হৃদয়ে লালন করুন। আপনার স্বপ্নের গাছটিকে জীবিত রাখুন। প্রতিদিন নিয়ম করে পরিচর্যা করুন। দেখবেন এক সময় আপনার স্বপ্নের বাগানে সুন্দর পাতাসহ রঙ্গিন ফুল ফুটতে শুরু করেছে এবং রঙ্গিন প্রজাপতিরাও আসতে শুরু করেছে। ঠিক আপনি যেমনটি চেয়েছিলেন।

আসুন স্বপ্ন দেখি এবং সেই স্বপ্ন বিনির্মাণে সবার্ত্মক চেষ্টা করি। মহান আল্লাহ আমাদের সেই তাওফিক দান করুন। আমীন।

লেখক রাকিবুজ্জামান আহমদ।।

শেয়ার করুন:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।