ছেলে-মেয়েদের কৈশোর পেরিয়ে ১৮ পা দিলেই চিন্তা বেড়ে যায় অভিভাবকদের। নাওয়া খাওয়া ভুলে চিন্তায় মগ্ন থাকেন অভিভাবক। সন্তান বড় হচ্ছে, তাকে পারিবারিক বা নৈতিক শিক্ষা আর নানান রকম পরামর্শ দিতে থাকেন। অন্য দিকে সদ্য কৈশোর পেরিয়ে পা রাখা ছেলে বা মেয়েটির এই সব শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা।
বাবা-মা বুঝে উঠতে পারেন না কি থেকে কি করবেন। কেননা সেই তরুণ-তরুণীটি যদি নিজের অপরিপক্ব মনটি দিয়ে ফেলেন কোন ভুল ভাল মানুষের হাতে তাহলে সব শেষ। শুরু হয় পারিবারিক, সামাজিক ও মানসিক অশান্তি। কিন্তু মজার বিষয় হল এই প্রজন্মের অনলাইনে প্রেম , প্রেমে অনীহা , স্মার্ট ফোনে প্রেম।
শুরু হয় পারিবারিক, সামাজিক ও মানসিক অশান্তি। কিন্তু মজার বিষয় হল এই প্রজন্মের তরুন তরুণীদের প্রেমে দারুন অনীহা। তারা প্রেম করতেই চাই না। তারা এর পরিবর্তে মোবাইল বা স্মার্ট ফোনে বেশি সময় কাটাতে পছন্দ করে। অনলাইনেই প্রকাশ করে তাদের মনের ভাল লাগা মন্দ লাগা, প্রেম, বন্ধুত্ব সবিই হয় ভার্চুয়ালকে ঘিরে।
অনলাইনের প্রেমকে ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরে এসে বাস্তবরুপ দিতে তারা চরম অনীহা প্রকাশ করে। ফলে বাস্তবিক অর্থে সরাসরি দেখা করা, গল্প করা, আরও গভীর প্রেম করা তাদের আর হয়ে উঠে না। তাই তাদের সেই ভাললাগা-মন্দ লাগা গুলো আর ভার্চুয়াল জগতের বাইরে বের হয়ে আসতে পারে না। আর একারনে অভিভাবকরা থাকতে পারেন অনেকটাই নিশ্চিন্ত।
তার পরও অভিভাবকদের থাকে বিশ্তর দুশ্চিন্তা। বাবা-মার সেই চিন্তাকে আমলে নিয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সান ডিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। এ তরুন প্রজন্ম প্রেমকে অনীহা করার গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে। তাদের জরিপ অনুযায়ী একটি বই প্রকাশ করেন। সে বইয়েই জানান, ১৯৯৫ সালের পর জন্ম নেওয়া প্রজন্ম প্রেম করতে আগ্রহী নন। হাতের মুঠোয় থাকা স্মার্টফোনই তাঁদের সঙ্গী। এ প্রজন্ম এখন বেড়ে উঠছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাঝে।
অনলাইনেই ভালো লাগা, পছন্দ, ভালোবাসা জানায় তারা। কিন্তু বাস্তব যখন সামনে, অর্থাৎ ঘরের বাইরে বের হয়ে দেখা করায় বড্ড আপত্তি তাঁদের। ফলে সত্যিকারের অভিসারে যাওয়া কিংবা কোনো সম্পর্ক গড়ে তোলায় এ প্রজন্ম অনেক পিছিয়ে। প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ তরুণ-তরুণীর সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তুয়েঙ্গো।
এই জরিপে আরও দেখা গেছে, ২০০৯ সালেও বিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রেম করার প্রবণতা ছিল উচ্চপর্যায়ের। কিন্তু সেটা এখন কমে এসেছে। ২০১৫ সালে ১৪ থেকে ১৮ বছরের কিশোর-কিশোরীদের ৫৬ শতাংশ প্রেম করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যেটা এর আগের প্রজন্মেই ছিল ৮৫ শতাংশের কাছাকাছি। তিনি এর পেছনে কারণ হিসেবে আরও জানান , ‘কিশোর-কিশোরীরা এখন বন্ধুদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করা কিংবা আড্ডা দেওয়ায় বিশ্বাসী নয়।’। তার চেয়ে ভার্চ্যুয়াল সম্পর্কে তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
তিনি অভিভাবকদের আরও একটি স্বস্তির খবর দিয়েছেন- এই অতিমাত্রায় স্মার্টফোন-প্রীতিতে টিনএজারদের মধ্যে এখন যৌন সম্পর্কের হারও কমেছে। ১৯৯১ সালের তুলনায় বর্তমানে টিনএজারদের মধ্যে যৌন সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা কমে গেছে ৪০ শতাংশ। প্রেমে দারুন অনীহা। তারা প্রেম করতেই চাই না।
তারা এর পরিবর্তে মোবাইল বা স্মার্ট ফোনে বেশি সময় কাটাতে পছন্দ করে।