রাহেবুল ইসলাম টিটুল লালমনিরহাট।।
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ২০ শয্যা হাসপাতালে মিলছে না চিকিৎসাসেবা। এতে এ ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালটিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো থাকলেও এগুলোর কার্যক্রম সচল নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতালটি, হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে হাসপাতালটি নির্মিত হয়।
১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে এটি পরিচালিত হয়। ২০০১ সালে হাসপাতালটি রাজস্ব খাতে আনা হলে নেমে আসে জনদুর্ভোগ। ২০১১ সালের অক্টোবরে হাসপাতালটিতে ইনডোর ও আউটডোর চিকিৎসাসেবা চালু হয়। প্রথম কয়েক মাস ভালোভাবেই এর কার্যক্রম চললেও পরবর্তী সময়ে অচল হয়ে পড়ে সেটি।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পোহাতে হয় নানা দুর্ভোগ। বর্তমানে ইনডোর চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। আউটডোর ও জরুরি চিকিৎসাসেবা চালু থাকলেও সেটা নামেমাত্র। ইউনিয়নের কেউ অসুস্থ হলে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়।
হাসপাতালের ভেতরের অধিকাংশ দরজায় তালা ঝুলানোর কারণে ভূতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে ইনডোর চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকার কারণে আধুনিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে চলেছে।
হাসপাতালের কার্যক্রম সচল রাখতে ৪ জন মেডিকেল অফিসার প্রয়োজন হলেও সেখানে কর্মরত আছেন মাত্র একজন। চারজন সহকারী নার্স কর্মরত থাকার কথা থাকলেও নেই একজনও। ফার্মাসিস্ট পদে একজন থাকার কথা থাকলেও পদটি জনবলশূন্য অপরদিকে আয়া পদটি শূন্য।
সেখানে প্রয়োজন ২ জন নারী। অফিস সহায়ক পদে দুজন থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কেউ কর্মরত নেই।
পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও স্টাফ না থাকায় চিকিৎসাসেবা হতে বঞ্চিত এ ইউনিয়নের মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয় না। এখানে ডাক্তার এসে দুই ঘণ্টা থেকে চলে যান।’ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘হাসপাতালে যে যন্ত্রপাতি আছে। সেগুলো যদি চালু থাকে তা হলে আমাদের পাটগ্রাম যাওয়া লাগত না। এখানেই চিকিৎসা পাইতাম।’
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নূর আরেফিন প্রধান জানান, হাসপাতালটি প্রত্যন্ত এলাকায়। কিন্তু এর কার্যক্রমের মধ্যে শুধু আউটডোর চালু আছে। এখানে জনবলের অভাবে ইনডোর চালু করা যাচ্ছে না। হাসপাতালটি জেলা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। এখানে দ্রুত জনবল নিয়োগ দেওয়া উচিত।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রায়হান আলী বলেন, ‘দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা হাসপাতালে একজন চিকিৎসক আছেন। একজনের পক্ষে তো ইনডোর চালু রাখা সম্ভব না। আরও চিকিৎসক ও নার্স দরকার। অ্যাম্বুলেন্স আছে একটি। তবে চালক নেই। দীর্ঘদিন পরে থাকার কারণে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যাটারি ও টায়ার নষ্ট হয়ে গেছে।’