রাহেবুল ইসলাম টিটুল লালমনিরহাট ।
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা চালালেও বিজিবির বাধার মুখে কাজ বন্ধ রেখেছে। পরে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সঙ্গে সন্ধ্যায় পতাকা বৈঠকে উভয় বাহিনীর মধ্যে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বর্তমানে বেড়া নির্মাণের কাজ বন্ধ থাকার তথ্য দিয়ে বিজিবির রংপুর ৫১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আল দীন বলেন, “আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে কাজে বাধা দিয়েছি। সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলের পাশে উভয় দেশের ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছে।“
স্থানীয়দের নিরাপত্তা ও জানমাল রক্ষায় বিজিবির তৎপর থাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে।”
রংপুর বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপজেলার পানবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার ওয়াহিদ বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।”
বিজিবি সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বুধবার দুপুরে দহগ্রাম ইউনিয়নের হাড়িপাড়া সীমান্তের প্রধান পিলার (ডিএএমপি) ৮ নম্বরের সাব পিলার ২৩ থেকে ২৮ নম্বরের শূন্যরেখা বরাবর কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করতে থাকে বিএসএফ।
তারা বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন অনুযায়ী শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করার নিয়ম না থাকলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সেটি না মেনে হাড়িপাড়া সীমান্তের ৮ নম্বর আন্তর্জাতিক পিলারের ২৩ থেকে ২৬ নম্বর সাব পিলার অংশে শূন্যরেখা বরাবর আকস্মিকভাবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ কাজ শুরু করে। বিষয়টি নজরে এলে বিজিবি তাতে বাধা দিলে কাজ বন্ধ রাখে বিএসএফ।
স্থানীয়রা বলেন, মঙ্গলবার ওই সীমান্তে রাতভর ভারতের কোচবিহার ৬ রাণীনগর ব্যাটালিয়নের ভীম ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বিপুল কাঁটাতারের বেড়া ও নির্মাণ সামগ্রী এনে রাখেন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা সীমান্তে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন।
এ অবস্থায় সেখানে বিজিবির অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। ওপারেও বিএসএফও অস্ত্রসহ অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করেছে বলে বিজিবির সদস্যরা জানতে পেরেছেন।
দহগ্রাম ইউনিয়নের হাড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আমিনুর রহমান বলেন, “বুধবার দুপুরের হঠাৎ বিএসএফের উপস্থিতিতে ওই সীমান্তের ধান খেতে ভারতীয় শ্রমিকরা লোহার পিলার ফেলতে শুরু করেন। পরে বিএসএফ সদস্যরা সেখানে আসেন। শ্রমিকরা মাটির গর্ত করে সেখানে পিলার ও কাঁটাতার লাগানো শুরু করেন।
পরে বিষয়টি স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পে জানাই। খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গ্রামবাসীসহ বিএসএফকে বাধা দেন। পরে বিএসএফ ও শ্রমিকরা সেখান থেকে সরে যান।“
আমিনুর রহমান বলেন, “তবে বিএসএফের বিপুল সদস্য সেখানে মোতায়ন করতে দেখা গেছে। পরে বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে অবস্থান নেয় ও স্থানীয়দের নির্ভয়ে থাকতে বলেন।”