৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস। ভারতীয় উপমহাদেশের নারী জাগরণের পথিকৃত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের
জন্ম ও প্রয়াণ দিবস আজ। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এ ছাড়া দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রকাশ করা হচ্ছে বিশেষ ক্রোড়পত্র, পোস্টার, বুকলেট ও স্যুভেনির। কর্মসূচির অংশ হিসেবে করোনা মহামারির এই সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ রাজধানীর শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘বেগম রোকেয়া পদক’ প্রদান করা হবে। সমাজসেবায় বিভিন্ন অবদানের জন্য এ বছর পাঁচজন নারীকে ‘বেগম রোকেয়া পদক ২০২০’ দেওয়া হবে ।
আজ বোধবার সকাল ১০টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বেগম রোকেয়া পদক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে অনলাইনে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
নারী শিক্ষায় প্রফেসর ড. শিরীন আখতার, পেশাগত উন্নয়নের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে কর্নেল (ডা.) নাজমা বেগম, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মঞ্জুলিকা চাকমা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধা বেগম মুশতারী শফি এবং নারী অধিকারে অবদানের ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা আক্তার এ বছর বেগম রোকেয়া পদকের জন্য মনোনীত হয়েছে।
পদকপ্রাপ্ত নারী বা তাঁর পরিবারের প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার কাছ থেকে সম্মাননা পদক, সনদ ও চেক গ্রহণ করবেন।
নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার কর্ম ও আদর্শকে সামনে রেখে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য প্রতিবছর ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সেসময় মুসলিম সমাজে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর কোন চল ছিল না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও পরিবারের সবার অগোচরে তাঁর বড় ভাইয়ের কাছে উর্দূ, বাংলা, আরবি ও ফারসি পড়তে এবং লিখতে শেখেন। তাঁর জীবনে শিক্ষালাভ ও মূল্যবোধ গঠনে তাঁর ভাই ও বড় বোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। পরবর্তী সময়ে বিহারের ভাগলপুরে সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয়। স্বামীর উৎসাহে ও নিজের আগ্রহে তিনি লেখাপড়ার প্রসার ঘটান। বেগম রোকেয়া ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মারা যান।
বেগম রোকেয়া ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি’ জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা হলো ‘মতিচূর’, ‘সুলতানার স্বপ্ন’, ‘পদ্মরাগ’ ও ‘অবরোধ-বাসিনী’।