লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার গার্মেন্টস কর্মী মাহমুদা বেগম মৌসুমী (২১) মরদেহ দাফনে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত বাঁধা প্রদানের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি।
শুক্রবার (২১ মে) বিকেলে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর এর সাথে কথা বলে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
লালমনিরহাট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) মোঃ রফিকুল ইসলাম তদন্ত শেষে প্রতিবেদনে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত এর বিরুদ্ধে মরদেহ দাফনে বাঁধা প্রদানের বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে।
গত ২১ মে গার্মেন্টস কর্মী মাহমুদা বেগম মৌসুমী গাজীপুর থেকে ট্রাকে করে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন মৌসুমী। পথিমধ্যে রংপুরের তাজহাট এলাকায় এসে চালক বুঝতে পারেন মৌসুমী মারা গেছেন। এরপর তার মরদেহ রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যান ট্রাকটির চালক ও হেলপার। পরে ৯৯৯ এর খবরের ভিত্তিতে তাজহাট থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে ২৩ মে পুলিশ মৌসুমীর বাবা গোলাম মোস্তফার কাছে তার মেয়ের মরদেহ হস্তান্তর করে।
মৌসুমীর বাবা গোলাম মোস্তফা অভিযোগ করেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাতকে মোবাইলে বিষয়টি অবগত করে নিজ এলাকায় মরদেহ দাফনের অনুমতি চান। কিন্তু চেয়ারম্যান ওই মরদেহ করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে তার পরিবার ও মরদেহবাহি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার হুমকী দেন বলে অভিযোগ করেন মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফা।
নিরুপায় হয়ে হতভাগ্য অসহায় বাবা মেয়ের মরদেহ দাফন করতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার একজন লাশবাহি গাড়ি চালকের সাথে ৫ হাজার টাকা চুক্তি করেন লাশ দাফনের। চালক মরদেহ দাফনের আশ্বাস দিয়ে গোলাম মোস্তফাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে মরদেহটি তিস্তা নদীতে ফেলে দেন। দুই দিন পরে স্থানীয়দের খবরে রোববার (২৪মে) রাতে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন গ্রামে তিস্তা নদী থেকে সরকারী ব্যাগে মোড়ানো অজ্ঞাত মরদেহটি উদ্ধার করে আদিতমারী থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, আদিতমারী থানায় একটি জিডি করা হয়েছিল। সেটি নিয়ে পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি দ্রæতই ঘটনার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।