রাহেবুল ইসলাম টিটুল লালমনিরহাট।।
৬ ডিসেম্বর শুক্রবার লালমনিরহাট পাক হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে লালমনিরহাট জেলা পাকহানাদার বাহিনীর হাত থেকে শত্রুমুক্ত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াই আর মুক্তিগামী মানুষের দুর্বার প্রতিরোধে এ জেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়।
ত্রিমুখী আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা লালমনিরহাটকে শত্রু মুক্ত করেছিল। ১৯৭১ সালের এই দিনে সুর্যোদয়ের সাথে সাথে বাংলার বীর সেনানী মুক্তিযোদ্ধারা জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছিলেন।
অবিস্বরণীয় এই দিনটি যথাযথ ভাবে উদযাপনের জন্য লালমনিরহাটে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকবৃন্দ ও জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে।
জানা গেছে, ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা তিন দিক থেকে আক্রমণ চালিয়ে লালমনিরহাট শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রিমুখী আক্রমণে টিকতে না পেরে খান সেনারা পিছু হটতে থাকে। এক পর্যায়ে চূড়ান্ত বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে মুক্তিযোদ্ধারা লালমনিরহাট ঘিরে ফেললে অবস্থা বেগতিক দেখে ওই দিন ভোর ৬টায় লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে পাকসেনা, রাজাকার আলবদর ও তাদের দোসর অবাঙালিরা দুটি স্পেশাল ট্রেনে করে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে পালিয়ে যায়। আর এভাবে লালমনিরহাট শত্রু মুক্ত হয়। এরপরেই সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে মুক্তির উল্লাস।
মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় মিছিল নিয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় এসে সমবেত হয়। আর স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে লালমনিরহাটকে শত্রু মুক্ত ঘোষণা করে। শত্রু মুক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চারিদিক থেকে লোকজন ছুটে আসতে থাকে শহরের দিকে। সন্ধ্যার মধ্যে শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড় এলাকায় লোক জন পূর্ণ হয়ে যায় আর মূক্তির উল্লাস করতে থাকে। শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে শহর ও আশ-পাশের গ্রাম।
লালমনিরহাট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেসবাহ্ উদ্দিন জানান, যথাযর্থ মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হবে।
প্রসঙ্গত: মুক্তিযুদ্ধের সময় গোটা বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৬ নং সেক্টরটি শুধু বাংলাদেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর সেটি অবস্থিত লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে।এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন, বিমান বাহিনীর এম খাদেমুল বাশার। বাকি ১০টি সেক্টর ছিল ভারতের বিভিন্ন এলাকায়।