ডেস্ক রিপোটঃ লালমনিরহাট অনলাইন নিউজ।
সম্প্রসারিত হচ্ছে মন্ত্রিসভা। তবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের ভাগ্য আপাতত খুলছে না।
সরকারি দলের বর্ষীয়ান নেতাদের মধ্যে দু-একজনের সম্ভাবনা থাকলেও নতুনদেরই প্রাধান্য থাকবে সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায়। সর্বোচ্চ ১০ জন নতুন করে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা এমন আভাস দিয়ে জানিয়েছেন, আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন।
একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শেষ হওয়ার পরে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবার সংসদের অধিবেশন চলাকালেই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের আভাস দিয়েছেন কেউ কেউ। আগামী ১১ মার্চ সংসদের অধিবেশন শেষ হচ্ছে।
তবে চলতি মার্চ মাসেই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করার বিষয়টি সবাই নিশ্চিত করেছেন।মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ নিয়ে আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতিতে এরই মধ্যে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে।
সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় কারা আসছেন, তা নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অসুস্থ হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ কিংবা রদবদলের এখতিয়ার সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
এদিকে, মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপিকে বর্তমান মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ব্যাপক গুঞ্জন আছে।
তাকে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলেও আলোচনা হচ্ছে।
এ পদে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বোন কিশোরগঞ্জ-১ আসনের এমপি ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির নামও শোনা যাচ্ছে।
বর্তমান মন্ত্রিসভায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কাউকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
এ বছরের ৭ জানুয়ারি গঠিত বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা ৪৭। এর মধ্যে ২৫ জন পূর্ণমন্ত্রী (প্রধানমন্ত্রীসহ), ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী।
একমাত্র ওবায়দুল কাদের ছাড়া আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে তারকা নেতাদের সবাই বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছেন।
বাদপড়া তালিকার শীর্ষে ছিলেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের দুই সিনিয়র সদস্য আমির হোসেন আমু এবং তোফায়েল আহমেদ।
বর্ষীয়ান এই দুই নেতা ১৯৯৬ সালের মন্ত্রিসভায় থাকলেও ২০০৯ সালে বাদ পড়েছিলেন। পরে অবশ্য তাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর দুই প্রভাবশালী সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও মোহাম্মদ নাসিম ১৯৯৬ সালের মন্ত্রিসভায় ছিলেন। ২০০৯ সালের মন্ত্রিসভায় না থাকলেও ২০১৪ সালের মন্ত্রিসভায় ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম।
মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগের তিন মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালনের পর বর্তমান মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাননি।
সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় আলোচিত এই চার নেতার মধ্যে অন্তত একজনের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলীয় নেতাদের কেউ কেউ মনে করছেন। এই চার নেতা বর্তমানে চারটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি।
তবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নীতিনির্ধারক নেতাদের কারও সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন অনেকেই।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু গত সরকারের মন্ত্রিসভায় থাকলেও সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় তাদের সম্ভাবনা আপাতত নেই।
এই দুই নেতা বর্তমানে দুটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। তবে ভবিষ্যতে ১৪ দলের শরিক রাজনৈতিক দলের কোনো কোনো নেতা মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেছেন, বর্তমান মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তবে সম্প্রসারণ করা হবে।
এ ক্ষেত্রে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।
মন্ত্রিসভায় কতজন অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন, তা আওয়ামী লীগের কোনো নেতাই নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে এই সংখ্যা ১০-এর বেশি হবে না বলে জানা গেছে। সেখানে নতুনদেরই প্রাধান্য থাকবে।
মন্ত্রিসভায় কমপক্ষে আরও দু’জনকে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী করার সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার নাম আলোচনায় আসছে।
এই নেতারা একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাননি। তবে তারা গত সংসদ নির্বাচনে সাংগঠনিক দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন।
টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন, এমন নেতাদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন দলের দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।