নিজস্ব প্রতিবেদক।
নির্বাচনে জয়ের আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই শোকে কাতর হতে হলো আওয়ামী লীগকে। লাখো ভক্ত অনুরাগীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
ফুসফুসের ক্যান্সার নিয়ে থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে নয়টার দিকে মারা যান তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের প্রেস উইং। রাত ১০টার দিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফকে বিশেষভাবে স্নেহ করতেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার মৃত্যুতে জানিয়েছেন গভীর শোক।
২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর মারা যান আশরাফ পত্মী শিলা ইসলামও। তিনি থাকতেন যুক্তরাজ্যে। তিনিও ভুগছিলেন জটিল রোগে। স্ত্রী বিয়োগের ব্যাথায় কাতর আশরাফের শরীরেও মারণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে।
গত বছরের ৩ জুলাই চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে করে থাইল্যান্ডে যান আশরাফ। তার শারীরিক অবস্থা সঙ্গীন- এই অবস্থাতেও তাকে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নৌকার প্রার্থী করে আওয়ামী লীগ। আর টানা পঞ্চমবারের মতো তাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করে জনগণ জানিয়ে দেয়, তাদের মণিকোঠায় ছিলেন আশরাফ।
১৯৫২ সালে ময়মনসিংহ শহরে জন্ম নেন আশরাফ। রাজনীতিতে জড়ান ছাত্র জীবনেই। ছিলেন অবিভক্ত ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সহ-প্রচার সম্পাদক।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর যুক্তরাজ্য চলে যান আশরাফ। প্রবাস জীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ভোটে দাঁড়ান। ওই বছরই প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে জেতেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন তিনি।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আশরাফকে নিয়ে নেতিবাচক কোনো খবর নেই। তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরাও তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জটিল পরিস্থিতিতে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।