নিউজ ডেস্ক :
অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা প্রবাসি বাঙ্গালি মুসলিম সিরাজের মৃত্যু ও জানাজায় বাঙ্গালি হুজুরদের অনুপস্থিতি ও পাকিস্তানী হাফেজ গুলজারের জানাজা পড়ানোয় তৈরী হল নতুন এক ইতিহাস।
আমি ইসলাম শাস্ত্রের কোন বিশেষজ্ঞ নই তবে ইসলামের নানা শাখার ব্যাখ্যায় সাধারন মুসলিমরা এখন বেশ বিভ্রান্তের মাঝে আছে।সবাই কোরআন-হাদিসের আলোকে ব্যখ্যার দাবি করে কিন্তু কেন যেন মনে হয় এতে একটা স্বার্থদ্বদ্ধ জড়িত থাকে। খুব পরিতাপের বিষয় হল ভিয়েনায় বসবাসরত একজন বাঙ্গালি মুসলিম সিরাজের মৃত্যুতে বাঙ্গালি হুজুরদের জানাজা না পড়ানোর সিদ্ধান্তে আমি হতবাক এবং বিস্মিত! কিন্তু আর একজন হুজুর কেন পড়ালেন? কারন জানিনা তারপরও বাঙ্গালী কমিউনিটির কাছে কিছু প্রশ্ন রাখার উদ্দেশ্য আমার এই লেখা;
কারন সম্ভাবতঃ সিরাজ একজন খৃষ্টান মহিলার সংগে লিভ টুগেদার করে চার সন্তানের জনক হয়েছিলেন কিন্তু তাতে কি সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেল? সে আল্লাহ বা ইসলাম সম্পর্কে কোন বাজে উক্তি, নিজেকে মুসলিম বলে অস্বীকার অথবা ধর্মান্তরিত হয়ে মুর্দাত বা সে কাফেরও ছিল না, তাহলে তার জানাজা দিবে না কেন? একজন মুসলিমের পাপ-পুণ্যের বিচার করে বেহেস্ত-দোযোখ নির্ধারন করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর। একজন মুসলিম ব্যাক্তি সম্পর্কে যাচাই-বাছাই না করে মৃত্যু লাশের সংগে এমন ব্যাবহার সত্যি কি কমিউনিটির জন্য দুঃখজনক নয়?
জানাযার ক্ষেত্রে “ হযরত আবূ যর গিফারী ( রাঃ ) বলেন, হযরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, হযরত জিব্রাইল ( আঃ) এক সময়ে আমার কাছে এসে বললেন, অথবা আমাকে শুভ সংবাদ প্রদান করলেন, আমার উম্মতের যে ব্যাক্তি এমনাহস্থায় মারা যাবে যে, সে আল্লাহর সাথে শিরক করেনি, সে বেহেস্ত যাবে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি হযরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, যদি সে ব্যাক্তি যেনাকার হয়, যদি চুরি করে, তবুও কি বেহেস্তে যাবে? তিনি বললেন, যদিও সে জেনাকার হয়, যদিও চুরি করে, তবুও আল্লাহর সাথে শিরক না করলে বেহেস্ত যাবে।”এ গেল একটি, অন্য একটি
বিশুদ্ধ হাদিসের আলোকে প্রমাণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার মুনাফিকদের সরদার আবদুল্লাহ বিন উবাই বিন সালুলের মৃত্যু ও তার জানাজার নামাজ আদায় করেছিলেন। নামাজ পড়ার পরই সুরা : তাওবার আয়াত : ৮৪ (প্রথমাংশ) এই আয়াতটি নাযিল হয় যার অর্থ “তাদের (মুনাফিকদের) মধ্যে কারো মৃত্যু হলে তুমি কখনো তার জন্য জানাজার নামাজ পড়বে না এবং তার কবরের পাশে দাঁড়াবে না।” এরপর আর কখনো নবীজি কোনো মুনাফিকের জানাজার নামাজ পড়েননি।
কিন্তু সিরাজ তো স্বঘোষিত মুনাফেক ছিলেন না? (মাঝে মাঝে সে জুম্মার নামাজ পড়ত।) আমার শঙ্কা ওখানেই যে আজ সিরাজের লাশের সংগে যে ব্যবহার করা হল কাল যে করিম বা অন্য কারোর সংগে হবে না তার প্রমান কি? আমি যে মুসলিম তার সার্টিফিকেট আমাকে দিবে কে? আমি নিজে না অন্য কেউ? এসব প্রশ্ন রেখে গেলাম বাঙ্গালি মুসলিম কমিউনিটির কাছে।
Saifuzzaman Sheikh
Austria.
ফেসবুক থেকে নেয়া।