রংপুরের চাঞ্চল্যকর আইনজীবী রথিশচন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবুসোনাকে হত্যার মামলায় তার স্ত্রী দীপা ভৌমিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার দীপার উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন জ্যষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ বি এম নিজামুল হক।
রায় ঘোষণার আগে কড়া পুলিশ পাহারায় এ মামলার আসামি দীপা ভৌমিক ওরফে স্নিগ্ধা সরকারকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় রংপুর আইনজীবী সমিতির শতাধিক সদস্য আদালতে ছিলেন। মামলার অপর আসামি দীপার প্রেমিক কামরুল গত নভেম্বরে মারা যান।
রথিশ জাপানি নাগরিক হোশিও কুনি হত্যা মামলার বিশেষ পিপি ছিলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ রংপুর জেলা কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রংপুরের সভাপতি, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি। রথিশ-দীপার দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে ছেলে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। আর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
গেল বছরের ৩ এপ্রিল রংপুর শহরের তাজহাট মোল্লাপাড়ায় নিজের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে বালুচাপা দেওয়া রথিশের লাশ উদ্ধার করে র্যাব।
এর আগে রথিশের স্ত্রী দীপা ভৌমিক সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ৩০ মার্চ ভোরে নগরীর বাবুপাড়া এলাকার বাড়ি থেকে বের হয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে শহরের দিকে রওনা হন রথীশ।
রথিশের ‘নিখোঁজের’ খবরে সেসময় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। তিনি যুদ্ধাপরাধ মামলার স্বাক্ষী ছিলেন বলে সন্দেহের তীর যায় জামায়াতে ইসলামী ও জঙ্গিগোষ্ঠীর দিকে।
পরে রথিশের স্ত্রী দীপা ও তার সহকর্মী স্কুলশিক্ষক কামরুল ইসলামকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের স্বীকারোক্তি মতে নির্মাণাধীন ওই বাড়ি থেকে রথিশের লাশ উদ্ধার করা হয়।
দীপা ও কামরুলের পরকীয়া সম্পর্কের জেরে তারা বিয়ে করার জন্য রথিশকে হত্যা করেন বলে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তারা দুজনই তাজহাট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। অপর আসামি কামরুল গত ১০ নভেম্বর মারা যান। এর আগে কামরুল ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন বলে জানিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ।