লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা ভুমি অফিসের নাজির(ভার) সুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার(২৭ মে) দুপুরে কালীগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলেন জমির মালিক অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুল জলিল।
সংবাদ সম্মেলনে জমির মালিক সেনা সদস্য(অবসর) আব্দুল জলিলের পক্ষের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ছেলে মীরবাগ ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক বায়েজিদুল ইসলাম লিটন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের কালভৈরব বাজার সংলগ্ন ৪২ শতাংশ জমির মধ্যে ২১ শতাংশ জমি ফাল্গুনি রানীর নিকট থেকে গত ২০০২ সালের ২১ নভেম্বর ৭৭৭৭ নং দলিল মুলে ক্রয় করেন সেনা সদস্য আব্দুল জলিল। মুলদাতা ফাল্গুনি রানী বিক্রয় দলিলে রাস্তার পাশে দিক উল্লেখ করে দলিল মুলে ক্রেতাকে জমি দখল দেন। সেই থেকে ২১ শতাংশ জমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিকসহ কৃষি চাষাবাদ করে আসছেন আব্দুল জলিল।
কিছু দিন আগে মুল মালিক ফাল্গুনি রানীর মৃত্যুর পরে একই দাগের অবশিষ্ট ২১ শতাংশ জমি ভোগ করছেন তার সন্তান লালজিৎ রাম ও রঞ্জু রাম। সেই জমি বিক্রির জন্য পুর্বের ক্রেতা জলিলের নিকট বায়নাবা দলিল করে দিলেও গোপনে নাজির সুরুজ্জামানের বাবা রুহুল আমিনের নিকট রেজিস্ট্রির চেষ্টা করেন লালজিৎ রাম ও রঞ্জু রাম। কিন্তু বায়নামা দলিল প্রদর্শন করায় সাব রেজিস্টার দলিল সম্পাদন করেন নি। অবশেষে পিছনের ওই ২১ শতাংশের ১৩ শতাংশ গোপনে রেজিস্ট্রি করে নেন নাজিরের বাবা রুহুল আমিন। সেই জমি প্রথম দলিলের পিছনের অংশ হলেও দখল নিচ্ছেন রাস্তা সংলগ্ন জলিলের জমি। এ নিয়ে আদালতের আশ্রয় নিলে কোন পক্ষকে নালিশী জমিতে না যেতে আদেশ দেন আদালত।
ভুমি অফিসের নাজির(ভার) সুরুজ্জামান লাঠির জোরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রোববার(২৬ মে) রাতে জমি জবর দখল করতে জলিলের ক্রয়কৃত জমির উপর বালু ফেলে দখলের চেষ্টা করেন। বিষয়টি স্থানীয় কালীগঞ্জ থানা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ও জেলা প্রশাসককে অবগত করেন জমির মালিক আব্দুল জলিল। এতেও কোন সুফল না পেয়ে হতাশ জমির মালিক আব্দুল জলিল অসুস্থ্য হয়ে পড়েন বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন।
দলিল মুলে ক্রয়কৃত জমি জবর দখল ঠেকাতে আইনী সহায়তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা কামনা করেন সেনা সদস্য আব্দুল জলিল।
কালীগঞ্জ ভুমি অফিসের নাজির(ভার) সুরুজ্জামান বলেন, জমি ক্রয় করেছেন আমার বাবা রুহুল আমিন। আমি নে বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। ভুমি অফিসের সরকারী কর্মচারী হিসেবে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করার অভিযোগ বিষয়ে তিনি মুখ খুলেননি।
দলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন বিপ্লব মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি নিয়ে পরিষদে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে সামনের জমির মালিক জলিল রাস্তার জন্য জমি ছেড়ে দিতে চেয়েছিল এবং তার জন্য পিছনে তারা জমি পাইত। পরে বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জমি পরিমাপ করার করার কথা ছিল। তার আগেই একটি পক্ষ জমিতে বালু ফেলায় আর আপোষ হয়নি।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) জহির ইমাম বলেন, ভুমি অফিসের কর্মচারীর বিরুদ্ধে জমি জবর দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি শুনেছি। অভিযুক্ত নাজিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।