জমি খারিজ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়ায় লালমনিরহাটে পাঁচজন সাংবাদিককে অফিসে আটকে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় লালমনিরহাট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়য়ে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় ৪০ মিনিট পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম এ মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অফিস গেটের তালা খুলে সাংবাদিকদের মুক্ত করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে ওই সহকারী কমিশনার সাংবাদিকদের ‘দালাল’ বলে অপমান করতে থাকেন। এ সময় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নিলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের সাথে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি। পরে সাংবাদিকসহ সকলে ঘটনাস্থলে ত্যাগ করেন।
এদিকে ঘটনার সময় একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সনের মোটরসাইকেল আটকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানও করেন সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকার। এ ঘটনার পর সাংবাদিকরা শহরের মিশনমোড়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে সাংবাদিকরা অবস্থান ধর্মঘট তুলে নেন।
সাংবাদিকরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের তিনজন অফিস সহকারী ভূমিক সংক্রান্ত শুনানি করছিলেন। সেখানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উপস্থিত ছিলেন না। মাইটিভি ও ডেইলি অবজারভার পত্রিকার সাংবাদিক মাহফুজ সাজু এ শুনানির ভিডিও ধারন করেন। এতে অফিসের স্টাফরা ক্ষুব্ধ হয়ে সহকারী কমিশনারকে ডেকে আনেন। সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকারের নির্দেশে সাংবাদিককে মাহফজু সাজুকে আটকে রাখা হয়। এ খবর পেয়ে প্রেস ক্লাব থেকে চার সাংবাদিক নিয়ন দুলাল, এস কে সাহেদ, ফারুক আহমেদ ও কাওছার আহমেদ ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকেও অফিসে আটকে রাখা হয়।
সাংবাদিক মাহফুজ সাজু বলেন, সেবা নিতে আসা লোকজনের সাথে খারাপ আচরণ করা হয় সহকারী কমিশনাররের (ভূমি) অফিসে। এ তথ্য জানতে এসে সত্যতা পাই। এসি ল্যান্ড আমাকে অফিসে আটকে রেখে সহকর্মীদের ফোন দিলে তারা ঘটনাস্থলে আসেন। এসিল্যান্ড তাদেরকেও অফিসে আটকে রাখেন। তিনি সাংবাদিক সম্পর্কে খুবই অপ্রীতিকর মন্তব্য করেছেন। আমাদের জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন।
দৈনিক কালবেলা পত্রিকার লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি এস কে সাহেদ জানান, এসিল্যান্ড আমাদের সাথে খুবই বাজে আচরণ করেছেন। সাংবাদিক সম্পর্কে কুরুচি মন্তব্য করেন।
লালমনিরহাট প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। শনিবারের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সাংবাদিকরা আন্দোলনে যাবেন।