রাহেবুল ইসলাম লালমনিরহাট।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নিজে গিয়ে তিস্তা পাড়ের মানুষকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহির ইমাম ।
এবং সর্বক্ষণিক দুই উপজেলার খোঁজ খবর নিচ্ছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ এমপি।
উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তার তীরবর্তী বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। পানি নিয়ন্ত্রণ ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতীয় আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সিকিম অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
সর্বশেষ আজ (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেলা ৪টায় যা বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রাত অবধি তা বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫০ সেমি ওপর পর্যন্ত উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে দুপুর ১২টায় একই পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ মিটার ৩৯ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সতর্কতা জারি করেছে তিস্তা বেষ্টিত উপজেলা প্রশাসনগুলো। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানেরা সতর্কীকরণ মাইকিং করে নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
নদীপাড়ের মানুষেরা জানান, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় শঙ্কায় চিন্তিত তারা। চলতি মৌসুমে কয়েক দফায় বন্যা হলেও তা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না। মৌসুমের শেষ দিকে বড় বন্যার আশঙ্কাও করছে নদী পাড়ের মানুষেরা।
নদীপাড়ের মানুষদের সতর্কীকরণ বার্তা দিতে সাথে ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ, কালীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কমল কৃষ্ণ সরকার।
কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তাহুর তাহু ও ভোটমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরহাদ মাষ্টার, এবং তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর ইসলাম আহমেদ,
বলেন, ‘আমরা তীরবর্তী মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করে অনুরোধ করছি।’
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম বলেন, ‘তিস্তাপাড়ের মানুষদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। বন্যা মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুতি নিচ্ছি।’