লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে মহিষের গাড়ি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরের বেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বিভিন্ন চরে মহিষের গাড়ির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে কর্ম সংস্থানের নব দিগন্তের সূচনা হয়েছে।সরেজমিনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তিস্তা নদী বেষ্টিত ৭টি চরাঞ্চলের গ্রাম চর বৈরাতী চর ভোটমারী শৌলমারী চর কাশীরাম,চর নোহালী কাকিনা, ঘুরে দেখাগেছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় একমাত্র বাহন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে পরিবেশ বান্ধব মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ি।বালু আর মরা তিস্তার শাখা নদীর রাস্তাসহ কাঁদা রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রলী, ট্রাক যেতে পারে না সেই সকল রাস্তার জনপ্রিয় বাহন হিসেবে মহিষের গাড়ির কদর বেড়েছে।উপজেলার সিংহ ভাগ রবি শস্য, ধান, পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, পিয়াজ,মরিচ, ডাল এসব অর্থকারী ফসল চরাঞ্চলেই বেশী উৎপাদন হয়। কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে যেতে না পারায় কম দামে ফড়িয়া দালালদের কাছে বাধ্য হয়েই চরেই বিক্রয় করতে হতো।বর্তমানে মহিষের গাড়ি চালু হওয়ায় কৃষক এখন তার উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে গিয়ে ন্যায্য দামে বিক্রয় করছে। কালীগঞ্জে এসব চরাঞ্চলে প্রায় শতাধিক মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ি রয়েছে।
কাকিনা ইউপির বিনিয়া আউলিয়ারহাট চর
গ্রামের মহিষ গাড়ি চালক আব্দুল হাকিম জানায়, এক সময় তার সংসার চলতো না, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে পরিবার পরিজন নিয়ে। মহিষের গাড়ি চালান শুরুর পর থেকে তার সংসারে এখন তেমন অভাব নেই।
ভোটমারী গ্রামের মহিষের গাড়ি চালক লতিফ মিয়া জানায়, প্রায় ৫বছর থেকে সে মহিষের গাড়ি চালায়, তার দৈনিক আয় ৫থেকে ৭শত টাকা, তবে আলুর মৌসুমে আয় আরও বেশী হয়।
একই কথা জানালেন মিনার বাজার গাড়ি চালক বকুল হোসেন। মহিষের পিছনে তাদের এক থেকে দেড়শ টাকা খাদ্য বাবদ ব্যয় হয়। মহিষের গাড়ির চাকা তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে আছে।
ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ মাষ্টার জানান তাঁর ইউনিয়নে শতাধিক ঘোড়া গাড়ি আছে। তুষভান্ডার ইউপি চেয়ারম্যান নুর ইসলাম জানান তার ইউনিয়নে ৬০ থেকে ৭০টি মহিষ ও ঘোড়া গাড়ি আছে।
আজ থেকে পাঁচ ছয় বছর আগেও এ উপজেলায় মহিষ ঘোড়ার গাড়ি দেখা যেত না, এখন প্রায় গ্রামে ঘোড়া ও মহিষের গাড়ি হয়েছে। সেই সাথে ঘোড়া গাড়ি যোগাযোগের জন্য চরাঞ্চলের বেশ পরিচিতি পেয়েছে এবং কর্ম সংস্থানের নব দিগন্তের সৃষ্টি হয়েছে।