লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা সাবেক ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু মুসা ছোটনের হত্যাকারীর ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নিহতের পরিবারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এসময় পরিবারের নিরাপত্তাসহ উল্লিখিত ২৬ আসামীর গ্রেফতার দাবি জানান।
শুক্রবার (৭এপ্রিল) দুপুরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের কালীগঞ্জ থানার সামনে এ মানববন্ধন পালন করেন। এতে সাকেক ছাত্রলীগ নেতা ছোটন হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার, গ্রেফতারকৃত আসামী পলাশকে ফাঁসি কার্যকর করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এছাড়াও ছোটনের পরিবারের নিরাপত্তা চানা তারা।
মানববন্ধনে ছাত্রলীগ নেতা ছোটনের বড় ভাই বলেন, ছোটন কে হত্যার সময় যে ছেলেটি ছোটন নিজেই আটক করেছেন তাকে গ্রেফতার পর পুলিশ আর কাউকে গ্রেফতার করেনি।
উল্টো ২৬ জনের নামে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দাযের পর তারা আমাকে হত্যার হুমকী প্রদান করছে,কিন্তু পুলিশকে এসব বিষয় জানালেও কোন উপকার আসছে না। তিনি আরো বলেন, মামলা হওয়ার পর আসামীদের নামের তালিকা আমরা পাওয়ার আগেই আসামীদের হাতে চলে যায়। কত টাকায় এসব তালিকা আসামীদের হাতে দেয়া হয়েছে আমরা জানতে চাই।
বক্তব্যে ছোটনের স্ত্রী বলেন, ছোটনের দুই শিশু বাচ্ছাকে বাবা ডাকতে পারেনি। একজনের ১৯ মাস আর আরেকটির ৬ মাস। তাদের দায়িত্ব এখন কে নিবে, মামলা দায়ের হওয়ার পর আসামীরা বাড়ি সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
প্রকাশ্যে ও ফোনে হুমকী প্রদান করছেন। ওসিকে জানালে কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা দ্রুত এই বিচার কার্কর চাই। না হলেও যেকোন সময় আসামীরা আমারা পরিবারের আবারও মেরে ফেলতে পারে।
ছাত্রলীগ নেতা ছোটনের মা ছালেমা বেগম বলেন,
আমার ছেলে কবরে,খুনিরা কেন বাইরে’
থানায় আসামীরা পুলিশের সাথে দেখা করে। দায়ের করা আসামী আবার থানায় এসে পুলিশের সাথে কিভাবে দেখা করে? , কথা টাকায় আসামীর সাথে উঠবস করা হচ্ছে।
মায়ের বুক খালি হওয়ার পরেও আপনাদের ঘুম ভাঙে না?, সন্তান যার যায় সেই বুঝে তার কি ক্ষতি হয়। আমি মা আমার যে ক্ষতি হয়েছে সেটি লক্ষ আরেকটি ছেলে এনে দিলেও সেই সন্তান আর পাবো না। তাই প্রধানমন্ত্রী কাছে অনুরোধ সে ছাত্রলীগ করতো, তাই আপনার দৃষ্টি দেওয়া দরকার। না হলে এই পরিবার কখনো বিচার পাবে না।
এতে বক্তব্য রাখেন, ছোটনের স্ত্রী নাজমা খাতুন, মামলার বাদি মা ছালেমা বেগম, বড় ভাই সাইফুল ইসলাস খোকন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কমলেন্দু রায় মিন্টু, উপজেলা আওয়ামী যুব লীগের সভাপতি রেফাজ রাঙ্গা, সাবেক ছাত্র নেতা নুরনবী মেম্বার, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিকুল ইসলাম সজিব, কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিষ্টার রহমান, ছাত্রলীগ কর্মী আলীরাজ আনছারী সঞ্চয়সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছাড়াও নিহতের পরিবারের সদস্য ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক লোক অংশ নেয়। পরে ছোটনের খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানিয়ে প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগ নেতা ছোটনকে গত মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার শ্রুতিধর জামিরবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের বাড়ির পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে খুন হোন।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয় লোকজন পলাশ মিয়া নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা ছোটনের মা ছালেহা বেগম বাদী হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।