লালমনিরহাট প্রতিনিধি :
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বাবার বাড়ি থেকে টাকা দিতে না পারায় না জানিয়ে বিয়ে করেন স্বামী। অতপর প্রতিবাদ করায় শাহিদা বেগম(৪১) নামে এক গৃহবধূকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছেরন স্বামী রফিকুল ইসলাম। আহত ওই গৃহবধূ বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
বুধবার (১৯ মে) দুপুরে উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের পূর্ব-সিন্দুর্না এলাকার ৮নং ওয়ার্ডে ঘটনাটি ঘটে। পরে রাতেই শাহিদা বেগম বাদী হয়ে রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে আরও দুই জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
গৃহবধূকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার পূর্ব-সিন্দুর্না এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহার আলীর ছেলে ট্রাক চালক রফিকুল ইসলাম (৪৫), রফিকুলের বাবা শাহার আলী(৬৫) ও তার মা রহিম বেগম(৬২)। আহত গৃহবধূ উপজেলার সিংগীমারী ইউনিয়নের ধুবনী এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শহিদুল ইসলামের মেয়ে শাহিদা।
বৃহস্পতিবার সকালে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় আহত গৃহবধূ শাহিদা বেগম ব্যাথার যন্ত্রনা হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছে। তার গলায় ও গালে কালছে দাগ দেখা যায়।
এ সময় শাহিদা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় ২৩ বছর আগে রফিকুলের সাথে বিয়ে হয় শাহিদার। এক মেয়েকে ও এক ছেলেকে নিয়ে ভালোই চলছিলো তাদের সংসার।
এরই মধ্যে মেয়েকে বিয়েও দেন। কিন্ত হঠাতই রফিকুল ইসলাম শাহিদাকে বাবার বাড়ি থেকে ২ লক্ষ টাকা আনতে বলেন। কিন্ত শাহিদার বাবা টাকা দিতে পারেননি। ফলে শাহিদার উপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়ক। কারনে-অকারনে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে খারাপ আচরণ শুরু করেন। এমনকি শশুর-শাশুড়িও খাবার ব্যবহার করেন।
ঠিকমত বাড়িতে আসেননা। স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ তো নেন না এবং খরচ দেয়াও বন্ধ করে দেন। এতে খেয়ে না খেয়ে সন্তানকে নিয়ে দিন পার করতে থাকেন শাহিদা। শাহিদা যানতে পারেন রফিকুল ইসলাম বগুড়ায় দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। ঈদেও বাড়িতে আসেননি। অনেক যোগাযোগ করেও কথা বলতে পারেননি স্বামীর সাথে।
তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে গত ১৯ মে বাড়িতে আসেন রফিকুল। এ সময় বাড়িতে না আসার, খোঁজ খবর না নেয়ার এবং খরচ না দেয়ার কারন কি? জানতে চাইলে কোন উত্তর না দিয়ে শাহিদাকে বাবার বাড়ি থেকে ২ লক্ষ্য টাকা নিয়ে আসতে বলেন।
টাকা না আনলে কোন খরচ দিবে না বলে জানিয়ে দেন রফিকুল। পরে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করার ব্যাপারে জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিদাকে বাশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে।
তার আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে আহত অবস্থায় শাহিদা বেগমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
এ বিষয়ে জানতে রফিকুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হরেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাঈম হাসান নয়ন বলেন, আহত ওই গৃহবধূ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ওনাকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। সুস্থ্য হলে বাড়ি যেতে পারবেন।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।