রাহেবুল ইসলাম টিটুল লালমনিরহাট:
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের ১নং কাশীরাম মুন্সীর বাজার এলাকার আব্দুল জলিলের স্ত্রী সোনাবি বেগম (৫০) কে নিয়ে গত ( ১০ এপ্রিল) লালমনিরহাট অনলাইন নিউজ সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ হয় এই শিরোনামে।
”আইতে ঘুমির পাং না, ঘরোত বৃষ্টির পানি দিয়ে গাও বিছনা ভিজি যায় তবু কাউ একনা মোক ঘর দেয় না”
গত ১০ এপ্রিল প্রকাশিত নিউজের লিংক
http://lalmonirhatonlinenews.com/news/4885/
’ এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে সংবাদটি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফরের নজরে এলে ওই বৃদ্ধার জন্য মুজিববর্ষে উপলক্ষে একটি পাকা ঘর নির্মানের জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসান কে নির্দেশ প্রদান করেন। প্রতিবেদনে সোনাবি বেগম মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারি একটি ঘর পাওয়ার আকুতি জানান।
রোববার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের ১নং কাশীরাম গ্রামে এসে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর সোনাবি বেগম বাড়িতে একটি পাকা ঘরের ভিত্তি স্থাপন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, লালমনিরহাট জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাশেদুল হক প্রধান, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসান ও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আহমেদ ও তুষভান্ডার ইউপি চেয়ারম্যান নুর ইসলাম।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশে মুজিববর্ষ উপলক্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না তাই কালীগঞ্জ উপজেলার সোনাবি বেগমের সাংবাদটি দেখে তাকে দ্রুত একটি পাকা ঘর করে দেওয়া হচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আহমেদ বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সোনাবি বেগমের জন্য একটি পাকা বাড়ি নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ দ্রুত শেষ হলে ওই পরিবারকে প্রধান মন্ত্রীর উপহার হিসেবে তাদেরকে প্রদান করা হবে।
জানা গেছে, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের ১নং কাশীরাম মুন্সীর বাজার এলাকার আব্দুল জলিলের পরিবার প্রায় দুই বছর ধরে জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করে আসছেন।
ঝালমুড়ি বিক্রেতা অসুস্থ আব্দুল জলিল (৬৫) পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৬ জন। দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। অতি কষ্টে বড় মেয়ের বিয়ে দেন। বড় ছেলে জোনাব আলী বিয়ে করে স্ত্রী নিয়ে অন্য জায়গায় বসবাস করেন। ছোট মেয়ে রুপালী অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। সবার ছোট রাজিব (১২) বাক প্রতিবন্ধী। তবে তার ভাগ্যে জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতা কিংবা ভিজিডি কার্ড।
গত বছর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে আব্দুল জলিলের ঝালমুড়ি বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। এতে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়ে। এখন অসুস্থ অবস্থায় ঘরে পড়ে আছেন আব্দুল জলিল। দেখার কেউ নেই।বেঁচে থাকার তাগিদে জরাজীর্ণ ভাঙা টিনের চালায় অসুস্থ স্বামী-সন্তানকে নিয়ে থাকতে হচ্ছে সোনাবি বেগমকে।