হাতিবান্ধা সংবাদদাতা লালমনিরহাট।।
দেশের ভুট্টার মোট চাহিদার বেশিরভাগ উৎপাদন হয় তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরবর্তী লালমনিরহাট জেলায়। গত বছরে উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবং দাম বেশি থাকায় এবার একটু আগেই ভুট্টা চাষাবাদে নেমে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। ফলে কয়েক বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ভুট্টা বীজের চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েক গুণ।
কৃষকের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে বীজ কোম্পানিগুলোর ডিলার ও এজেন্টরা সিন্ডিকেট তৈরি করে অতিরিক্ত দামে বীজ বিক্রি করছে। এতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ কৃষকরা। বীজ কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেট ভাঙতে ও হয়রানি থেকে বাঁচতে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন খুচরা কৃষিপণ্য বিক্রেতারা।
বুধবার তারা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন, চলতি মৌসুমে ভুট্টা বীজের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার বিভিন্ন বীজ কোম্পনির এজেন্ট ও ডিলাররা কোম্পানির পাইকারি মূল্যের চেয়েও অতিরিক্ত দামে বীজ বিক্রি করছে। খুচরা কৃষিপণ্য বিক্রেতারা পার্শবর্তী উপজেলাগুলো থেকে একই কোম্পানির বীজ কম দামে কিনে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন হাতীবান্ধার কতিপয় ডিলার।
সম্প্রতি একটি কোম্পানি খুচরা বিক্রেতাদের একটি সতর্কীকরণ নোটিশ দিয়েছে। ওই নোটিশ অবৈধ এবং আইনগত কোন ভিত্তি নেই বলে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা দাবি করেছেন।
অভিযোগপত্রে খুচরা বিক্রেতারা আরও উল্লেখ করেন, যারা হাতীবান্ধার ডিলারদের কাছে বীজ ক্রয় না করে পাশের উপজেলা থেকে বীজ ক্রয় করে নিয়ে আসছেন ওই বীজগুলোকে ভেজাল ও চুরির কথিত অভিযোগ তুলে হয়রানির চেষ্টা করছেন।
খুচরা বীজ বিক্রেতা শামসুল হক, জসিম আলী, কুতুব উদ্দিন ও এরশাদুল হক বলেন, হাতীবান্ধা উপজেলায় যে ভুট্টা বীজের প্যাকেট ৯ হাজার ২শ’ টাকায় ডিলাররা বিক্রয় করছেন। একই বীজ পাশের উপজেলা থেকে ৮ হাজার ৬শ’ টাকায় আমরা ক্রয় করছি। ডিলাররা শুধু আমাদের নয়, কৃষকদেরকেও জিম্মি করছে। তাই কৃষকদেরকে বাঁচাতে আমরা জেলা প্রশাসকসহ কৃষি বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নিকট অভিযোগ করেছি।
হাতীবান্ধা উপজেলা দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের কৃষক আকতার আলী, আসাদুজ্জামান ও মফিজুল ইসলাম বলেন, যে ভুট্টা বীজ গত বছর ২৬০ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা কেজি দরে ক্রয় করেছি; সেই ভুট্টা বীজ এবার ৪৮০ টাকা থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, বিষয়টি আমি ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি। বীজ ডিলারদের সর্তক করে দেয়া হয়েছে। তারপরও পুরো বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।