লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চনশর গ্রামের বাসিন্দা আজগর আলীর পুত্র একেএম মাহফুজার রহমানের সঙ্গে একই উপজেলার সুন্দ্রাহবী গ্রামের বাসিন্দা নুর আলীর কন্যা মুসলিমা খাতুন বিথী’র পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান আসে। কয়েক বছর খুব ভালই চলে তাদের দাম্পত্য জীবন। পরে স্ত্রী স্বামীর কাছে জমি রেজিঃ চাওয়াসহ বিভিন্ন কারনে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। অবশেষে দুজনের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না।
একপর্যায় স্বামীর সাথে ঝগড়া করে স্বামীর ড্রয়ারে রাখা জনতা ব্যাংক একাউন্টের চেক বইটি নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায়। যাহার হিসাব নং ৭২৫৯। চেক বইয়ের পাতা নং এসবি-৮৬০১৯১১ হতে ৮৬০১৯২০।
অনেক খোজাখুজির পর চেক বইটি না পেয়ে ২০১৭ সালের ৫ মার্চ কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করে ব্যাংক কতৃপক্ষের নিকট কপি জমা দিয়ে নতুন বই উত্তোলন করে স্বামী মাহফুজার।
কিছু দিন পর স্ত্রী বিথী আদালতে একটি নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করলে পরে ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে ওই স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে দেন মোহরের টাকা আদালতের মাধ্যেমে পরিশোধ করেন । ভেবেছিলেন এতে হয়তো মুক্তি মিলবে মাহাফুজারের ।
অতীতের দুঃসহ স্মৃতি মুছে একটু একটু করে মাহফুজার যখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরছিলেন, ঠিক তখনই পিছু নিলেন তার সেই ডিভোর্সি স্ত্রীর ভাই লিমন। অভিনব কায়দায় নুর আলী ট্রেডার্স থেকে রড,টিন,সিমেন্টের টাকা দাবী করে হারিয়ে যাওয়া সেই চেক দিয়ে মাহফুজারের বিরুদ্ধে গত ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারীতে ঠুকে দিলেন মিথ্যা মামলা।
বৃহস্পতিবার ২২ আগস্ট সরেজমিনে সুন্দ্রাহবী এলাকার নুর আলী ট্রেডার্স গিয়ে জানা যায়, ওই দোকান দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। বিগত দিনে ওই দোকানে শুধু এক দামে টিন বিক্রি করত। বর্তমান ওই দোকানটি বন্ধ থাকায় ভাড়া প্রদান করেছে নুর আলী সেখানে একটি ব্যানার দেখতে পাওয়া যায় মেসার্স নাজিমুদ্দিন পোল্ট্রি। তার পাশে একটি রুমের উপর দেখা যায় নুর আলী ট্রেডার্সের নতুন একটি সাইনবোর্ড।
নুর আলী ট্রেডার্স এর বিষয় জানতে চাইলে পাশ্ববর্তী গলামাল ব্যবসায়ী আহেদুল ইসলাম, স্থানীয় বাসিন্দা আরব আলী, মেসার্স নাজিমুদ্দিন পোল্ট্রি’র মালিক নাজিমুদ্দিন ও রবিউল বলেন, কিছুদিন পূর্বে ওই নুর আলী ট্রের্ডাসের সাইনবোর্ড টি লাগিয়েছে এখনও দোকান উদ্ভোধন করেন নি। আগে যে দোকানে টিন বিক্রি করত সেটি ভাড়া দিয়েছে। সে দোকানে আদৌ কখনও রড,সিমেন্টে বিক্রি করেনি।
সাইনবোর্ড তৈরীর বিষয় তুষভান্ডার বাজারের মৌ প্রিন্টার্স এর মালিক মফিজুল ইসলাম জানান, আমাকে নুর আলী ট্রের্ডাস ও নাজিমুদ্দিন পোল্ট্রি নামে দুটি ডিজিটাল ব্যানার চলতি বছরের ১৪ জুলাই ডেলভারী দিয়েছি।
এ বিষয় মাহফুজার রহমান বলেন, নুর আলী ট্রডার্স থেকে আমি কোন মালামাল ক্রয় করিনি। আদৌ ওই দোকানে টিন ব্যাতিত রড সিমেন্ট বিক্রি করত না। তারা একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। এমন মিথ্যা মামলায় সামাজিক, পারিবারিক ও অর্থনৈতিকভাবে আমি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।
তার দায়ের করা আগের একটি মামলা আদালত খারিজ করার পরও এখন আবার নতুন করে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমি আর মানসিক যন্ত্রনা নিতে পারছি না, এগুলো প্রতিনিয়ত কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে আমায়।
এ বিষয় জনতা ব্যাংকের ব্যাবস্থাপক প্রদীব কুমার জানান, চেক হারানোর জিডি কপি পেয়েছি। আবার ওই চেকখানা নুর আলী ট্রেডার্স উপস্থাপন করলে একাউন্টে টাকা না থাকায় ভূলবশত ডিজঅনার হয়।
এ প্রসঙ্গে নুর আলী ট্রাডার্সের মালিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অসুস্থ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।