বিভাগের পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড থেকে চুরি যাওয়া নবজাতককে ৪ দিন পর উদ্ধার করেছে রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশ। ঘটনার মূল আসামি ইয়াসমিন সুলতানা মুন্নীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার বিকেলে রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ খবর জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল আলীম মাহমুদ জানান, গত ১০ অক্টোবর ভোরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড থেকে নীলফামারী জেলার কিশোরীগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া মাস্টার পাড়া গ্রামের পরেশ চন্দ্রের স্ত্রী সুধারানীর নবজাতক চুরি হয়ে যায়। প্রসুতি সুধারানী আগের দিন সন্ধায় হাসপাতালে ভর্তি হবার পর রাতে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমের তার ছেলে হয়। পরে তাকে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে রাখা হয়। নবজাতক চুরি হওয়ার পর পরেই পুলিশ হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পুরো নগর জুড়ে চিরুনি অভিযান শুরু করে। রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নব জাতকটিকে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রের পাশে একটি পরিত্যাক্ত ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়। নবজাতককে চুরি সঙ্গে জড়িত ইয়াসমিন সুলতানা মুন্নী নামে গৃহবধূকে গ্রেফতার করা হয়। সে শিশু চুরি করার কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ কমিশনার বলেন,‘হাসপাতালের সিসি টিভির ফুটেজ দেখে নবজাতককে চুরি করার সময় মহিলাটি যে শাড়ি পড়েছিলো সেই শাড়ি দেখেই চোরকে সনাক্ত করা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘নবজাতককে চুরি করতে আসার সময় মহিলাটি বোরখা পড়ে এসেছিলো। ভোরে নবজাতকের ফুফু লক্ষ্মিরানী পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডের বারান্দায় সারা রাত অবস্থান করে। কিন্তু ভোরের দিকে সে পাশের বাথরুমে গেলে এ সুযোগে ওই মহিলা পড়নের বোরখা খুলে শাড়ি পড়ে নবজাতকটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।’
তিনি জানান, ‘হাসপাতালের সিসি টিভির ফুটেজে পুরো দৃশ্য পরিষ্কারভাবে দেখা যাওয়ায় আমাদের পক্ষে চোরকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,‘নবজাতকটিকে উদ্ধার করতে মেট্রোপলিটান পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ও কোতোয়ালি থানার পুলিশসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিশ্রম করেছেন। সর্বপোরি নবজাতকটিকে উদ্ধার করতে পারায় মহান আল্লাহ তায়লার কাছে শুরিয়া আদায় করছি। শিশু চুরির সঙ্গে আর কারা জড়িত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, নবজাতক চুরির প্রধান আসামী মুন্নীর বাড়ি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি গ্রামে। তার স্বামীর নাম ফারুখ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে পুলিশ কমিশনার চুরি যাওয়া নবজাতককে তার ফুফু লক্ষ্মিরানীর কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় মেট্রোপলিটান পুলিশের ডেপুটি কমিশনার আবু মোত্তাকিন মেনান, উপ-পুলিশ কমিশনার শহিদুলালাহ কাওছার , ফারুখ হোসেনসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।