রাহেবুল ইসলাম টিটুল লালমনিরহাট।।
যখন ঘড়ির কাঁটায় ঠিক বেলা ১১টা। পরীক্ষার্থীরা সবাই কেন্দ্রে ঢুকে গেছে। অথচ একজন পরীক্ষার্থী কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে কান্না করছে। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এমনই দৃশ্য দেখা গেলো।
ওই পরীক্ষার্থীর নাম পল্লব রায়। সে উপজেলার
শংকর বাজার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিএম কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে পল্লব রায় এর সঙ্গে কথা হয়। সে জানায়, নির্ধারিত সময়ে সে তার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অধ্যক্ষ যামিনা রায়ের কাছে ছয় হাজার টাকা দিয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছিল। তবে তাকে প্রবেশপত্র দেওয়া হয় সুব্রত নামের একটি ভূল এডমিট কার্ড প্রদান করে ঠিক পরীক্ষার আগের দিন শেষ বিকালে ততক্ষণে পরে দিন পর্যন্ত সব কিছু গোছাতে তার পরীক্ষা দেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে যায়।
এরই মধ্যে ওই রাতেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রার্থমিক শিক্ষা অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে তারা পরামর্শ দেন যে ওই অধ্যক্ষকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পারলে একটা সামাধান হতে পারে
পরে অধ্যক্ষের সঙ্গে মোবাইল ফোন একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তার মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায় অবশেষ গত রাতে তার বাড়িতে গিয়ে
অধ্যক্ষের সাথে কথা বাত্রা বললে তিনি জানান সকালে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে আমি সব ঠিক করে দিবো। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হল না শেষ মেস ছাত্রের হাতে ভুল কাগজ রেখেই অধ্যক্ষ পালিয়ে গেলেন!
কিন্তু পরীক্ষার দিন কাগজ পত্রের সঠিক হুদিস না মিললে কেন্দ্রের সচিব ও কেন্দ্রের সভাপতি তার ডাটাবেইজ ঘেটে দেখতে পেলেন সে বানিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সদ্য রেজিষ্ট্রেশন কৃত ৯ম শ্রেনীর একজন ছাত্র! অথচ সে শংকর বাজার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিএম কলেজের এসএসসি এসএসসি পরীক্ষার্থী কিন্তু অধ্যক্ষের দুর্নীতির কারনে সঠিক কাগজ না পাওয়ায়
সে পরীক্ষা দিতে পায়নি। এজন্য তার বন্ধুরা পরীক্ষার রুমে ঢুকে গেলেও সে কেন্দ্রের বাইরে নিরবে দাঁড়িয়ে কান্না করছিল, পল্লব আরও জানায়, তার বাবা একজন কৃষক।
সে একমাত্র ছেলে। পরিবারের কষ্ট ঘোচাতে সে নিজেও পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজ করে অর্থ উর্পাজন করে। তার ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা করে একটি চাকরি করে সংসারের অভাব ঘোচাবে।
কিন্তু দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ যামিনি রায় তার ফরম পূরণের টাকা বোর্ডে জমা না করায় সে পরীক্ষা দিতে পারলো না।
শংকর বাজার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিএম কলেজের সহকারী শিক্ষক জানান, পল্লব রায় একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী ছিলেন।
সে অধ্যক্ষের কাছে ফরম পূরণের টাকা দিয়েছিল। কিন্তু তিনি ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এজন্য পল্লব রায় পরীক্ষা দিতে পারছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান
নানা অনিয়মের কারণে ওই স্কুল এখনো এমপিও ভুক্ত হয় নি।
বেলা ১১ টার পরে থেকে এ বিষয়ে শংকর বাজার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিএম কলেজের
অধ্যক্ষ যামিনি রায়ের সাথে যোগাযোগ ও তার মোবাইল ফোনো যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়ার যায়।
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়টি আজ সকালে জানতে পেরেছি। তবে এখন আর তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানোর সুযোগ নেই। ওই পরীক্ষার্থী চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল মান্নান জানান আমাকে বিষয়টি পল্লবের অবিভাবক মৌখিকভাবে জানায়, তখন অনেক চেষ্টা করেছি সামাধানের কিন্তু অধ্যক্ষ না আশায় কোন কিছু করা সম্ভব হয়নি,তবে আমাদের লিখত অভিযোগ দিলে বিষয় টি আমরা আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।