ঢাকাWednesday , 12 January 2022
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দূর্নীতিঃ
  3. আইন – আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খেলাধুলা
  7. জাতীয়
  8. নির্বাচন
  9. বিনোদন
  10. মুক্ত কলাম
  11. রাজনীতি
  12. লালমনিরহাট
  13. লিড নিউজ
  14. শিক্ষা
  15. শিল্প ও সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হিমাংশু-সাবিত্রী দম্পতির মৃত্যুর জট খুলতে মাঠে ডিবি পুলিশ

TITUL ISLAM
January 12, 2022 5:50 pm
Link Copied!

হাতিবান্ধা সংবাদদাতা, লালমনিরহাট :

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় হিমাংশু-সাবিত্রী দম্পতির মৃত্যু নিয়ে জট খুলতে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র একটি দল। গত সোমবার সাবিত্রী রানীর হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল ও হিমাংশু রায়ের আত্নহত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জ’র অ্যাডিশনাল ডিআইজি (অপরারেশনস্ অ্যান্ড ক্রাইম) মো: ওয়ালিদ হোসেন।

ইতোমধ্যে সাবিত্রী রানী হত্যাকান্ডের তদন্দের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের উপ- পরিদর্শক আব্দুর সবুরকে। অন্যদিকে পুলিশ হেফাজতে হিমাংশু রায়ের আত্নহত্যায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে ৩ সদস্য’র একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে পুলিশ।

এর আগে গত শুক্রবার ভোর রাতে ওই উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পুর্ব কাদমা এলাকায় নিজ বাড়িতে কথিত ডাকাতির ঘটনায় হত্যাকান্ডের শিকার হয় হিমাংশু রায়ের স্ত্রী সাবিত্রী রানী। স্থানীয়রা ও পুলিশের সন্দেহ ওই হত্যাকান্ডের সাথে হিমাংশু রায়সহ আরো কেউ জড়িত থাকতে পারে।

খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং হিমাংশু রায়কে আটক করে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তাকে নারী হেল্প ডেস্ক রুমে রাখা হলে ওই রুমে থাকা তার দিয়ে আত্নহত্যার চেষ্টা করেন হিমাংশু রায়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ওই হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।

পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে হিমাংশু রায় পুলিশকে জানান, তিনি পাশে এক অনুষ্ঠান থেকে ভোর সাড়ে তিনটার দিকে বাড়ি ফিরে তার বড় মেয়ে প্রিয়াংকার কাছে জানতে পায় তার স্ত্রীকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে ঘরের পাশে তুলশী গাছের নিচে তিনি তার স্ত্রী সাবিত্রী রানীর লাশ দেখতে পায়।

তবে হিমাংশু-সাবিত্রী’র বড় মেয়ে প্রিয়াংকা জানান, ভিন্ন কথা। তিনি কখনো বলেন বাবা রাত ১২টার দিকে বাড়িতে এসেছে তখন মাসহ আমরা ঘুমে ছিলাম। কখনো বলেন বাবা আসার আগে কালো কোর্ট পড়া একজন লোক এসে মাকে গলাটিপে হত্যা করেন।

তাহলে সেই লাশ ঘরের বাহিরে কি ভাবে গেল এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রিয়াংকা জানান, তখন আমি ঘুমে ছিলাম।

একটি সুত্র বলছে, হিমাংশু রায় আত্নহত্যার আগে পুলিশের কাছে দাবী করেছেন তার ঘরে ৭২ হাজার টাকা ছিলো। সেই টাকা নাকি ডাকাতরা তার স্ত্রীকে হত্যা করে নিয়ে গেছেন।

যদি তাই হয় হিমাংশু রায়ের স্ত্রী সাবিত্রী রানী প্রতিবেশী একজনের কাছ থেকে দুই টি ছাগল ক্রয় করলেও সেই টাকা দিতে পারে নাই কি কারণে। এছাড়া সাবিত্রী রানী কয়েকদিন আগে একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা লোন তুলেছে সেই টাকা নিয়ে কি কারণে বৃহস্পতিবার হিমাংশু-সাবিত্রীর মাধ্যে ঝগড়া হয়েছে ? ওই এলাকায় নিয়মিত জুয়া খেলা আসর জমে।

সেই জুয়ার আসরে নিয়মিত যেত হিমাংশু। মৃত্যুর দুই দিন আগে জুয়া খেলতে গিয়ে হিমাংশু রায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা বাজিতে হেরে লজ দিয়ে আসে এমন একটি তথ্য পাওয়া গেছে। তাহলে সেটা কোন টাকা ? ওই সুত্রটি আরো বলছে ওই জুয়ার আসরের সাথে কারা কারা জড়িত ও কারা কারা জুয়া খেলতে যায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও এ হত্যকান্ডের রহস্যের তথ্য বের হতে পারে।

এদিকে প্রতিবেশীরা জানান, হিমাংশুর বাড়িতে মধ্য রাতে ডাকাতি হয়েছে এমন কোনো চিল্লাচিল্ল আমরা শুনতে পারি নাই। সকাল বেলা হিমাংশুর মুখে শুনি রাতে নাকি ডাকাতরা তার স্ত্রীকে হত্যা করে টাকা নিয়ে গেছেন। এ সময় হিমাংশু রায়ের আচরণ দেখে তার প্রতি সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। স্থানীয় সেই বিষয়টি পুলিশকে জানান।

সরেজমিনে ওই এলাকা গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় ভিন্ন তথ্য। হিমাংশু রায় ছিলো একজন বেকার। তিনি নিয়মিত জুয়া খেলতেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় প্রায় সময় সাবিত্রী রানীকে নির্যাতন করতেন হিমাংশু রায়। ঘটনার দিনও পাশে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অযুহাতে জুয়া খেলে ভোর রাতে বাড়ি ফিরেছেন হিমাংশু।

এলাকাবাসী বলছেন, যদি হিমাংশুর বাড়ি ডাকাতি হয় তাহলে ঘটনার সময় বা তার পরে চিল্লাচিল্ল করা হলো কেন ? আমরা প্রতিবেশীও বুঝলাম না যে হিমাংশুর বাড়ি ডাকাতি হয়েছে। হিমাংশু-সবিত্রী’র বড় মেয়ে প্রিয়াংকা বলছে একজন কালো কোর্ট পড়া লোক এসে তার মাকে গলা চিপে ঘরের ভিতরে হত্যা করেছে।

প্রিয়াংকার কথা যদি সত্য হয় তাহলে সেই লাশ ঘর থেকে বাহিরে বের করলো কে ? অনেকেই সন্দেহ করেছেন সাবিত্রী হত্যাকান্ডের সাথে তার স্বামী হিমাংশু রায় জড়িত থাকতে পারে এবং এ হত্যাকান্ডে কেউ না কেউ হিমাংশু রায়কে সহযোগিতাও করেছেন।

এ বিষয়ে হিমাংশু রায়ের পিতা বিশ্বেস্বর রায় বলেন, আমার ছেলের বউ হত্যাকান্ডের সাথে আমার ছেলে জড়িত থাকলেও থাকতে পারে। সেটা যেহেতু দেখি নাই এ নিয়ে কি বলি ? আমার ছেলে আত্নহত্যা করেছে ছেলের মৃত্যু নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। ছেলে আত্নহত্যায় করেছে তা মেনে নিয়েই সৎকার করেছি।

তবে হত্যাকান্ডের শিকার সাবিত্রী রানীর ভাই খগেন চন্দ্র বলেন, আমার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। ভাগিনী দুইটির ভবিষ্যত চিন্তা করে এ নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করতে চাই না। আমরা নিজেদের মধ্যে মিমাংশা করে নিয়েছি। তবে আমার বোনের হত্যাকান্ডের সাথে একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে।

সাবিত্রী রানী হত্যাকান্ডে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুর সবুর বলেন, এ হত্যাকান্ড নিয়ে নানা প্রশ্নের জন্ম দেখা দিয়েছে। পরিবারের লোকজন তেমন কথা বলতেও চাচ্ছে না। জন্ম নেয়া প্রশ্ন গুলোর উত্তর বের হলে এ হত্যাকান্ডের রহস্যও বের হবে।

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, সাবিত্রী হত্যাকান্ড ও পুলিশ হেফাজতে হিমাংশু রায়ের আত্নহত্যায় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাবিত্রী হত্যাকান্ড নিয়ে ডিবি পুলিশ কাজ করছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন:

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।