বিদ্যুৎ-সংকট মোকাবিলায় দেশজুড়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কালীগঞ্জে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ ঘোষিত সূচি অনুযায়ী লোডশেডিংয় করছে না।
ফলে গ্রাহকেরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। কর্মকর্তা বলছেন, চাহিদার চেয়ে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে সূচিও ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিভাগের পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী সময় মতো লোডশেডিং মানা হয়নি। কোথাও কোথাও দুই ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং ছিল। এ ছাড়া কোথাও কয়েক দফায় লোডশেডিং হয়েছে।
এলাকাভেদে লোডশেডিংয়ের বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারের পর গ্রাহকেরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তবে সে অনুযায়ী লোডশেডিং না হওয়ায় গ্রাহকেরা বিপাকে পড়েছেন।
কালীগঞ্জে এলাকাভেদে লোডশেডিংয়ের যে সময়সূচি করা হয়েছে, তা মানা হচ্ছে না। এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের পর বিদ্যুৎ এলেও আবার আধঘণ্টা পর বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এমন অভিযোগ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের।
কালীগঞ্জ নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) কার্যালয় সূত্র জানায়,
উপজেলায় প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ১৩ থেকে ১৫ মেগাওয়াট। সেখানে চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ৭/ ৮ মেগাওয়াট। চাহিদার প্রায় অর্ধেক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ কম।
কালীগঞ্জ উপজেলার ফিডারের আওতাধীন..
এলাকায় যে সময় গুলো পর্যন্ত লোডশেডিং হওয়ার কথা ছিল। তবে সে সময়ের চেয়ে কয়েক দফা লোডশেডিং হচ্ছে।
নেসকোর পক্ষ থেকে জানা হয়েছিল, তালিকা অনুযায়ী কোনো এলাকায় ১ ঘণ্টা লোডশেডিং হলে তারপর সেখানে ২ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে। এলাকাভেদে লোডশেডিংয়ের পর ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকবে। তবে বাস্তবে এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে না।
কালীগঞ্জ বাজারের এলাকার কম্পিউটার কম্পোজ ও ফটোস্ট্যাস্ট ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন, আতিক ইসলাম বলেন, আদালত পাড়ায় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ব্যবসা হয়। কিন্তু এই সময়ে এখানে বিদ্যুৎ নেই। এলাকার গুরুত্ব বুঝে সেই এলাকা লোডশেডিং করা উচিত বলে তাঁর মতো।
এদিকে এলাকাভেদে লোডশেডিংয়ের বিষয়ে পত্রপত্রিকাসহ বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে সংবাদের পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকেরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। বাসাবাড়িতে পাম্প দিয়ে পানি তোলার কাজটিও রুটিনমাফিক শুরু হয়েছে।
তবে লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদনশীল ও গুদামজাত কারখানাগুলো চালাতে বিপাকে পড়ছেন মালিকপক্ষ। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাঁদের নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।
সকাল থেকে বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি দোকানে পেট্রলচালিত জেনারেটর চলছে। ব্যবসায়ী শাহ আলম হোসেন বলেন, ‘এ অবস্থায় দোকান খুলে কর্মচারীর বেতন দেওয়াও কষ্টকর হবে। সকাল থেকে বিদ্যুৎ শুধু আসা-যাওয়া করছে। কোনো নিয়মের বালাই নেই। আমাদের মার্কেটে কখন বিদ্যুৎ থাকবে আর কখন থাকবে না, তা বিদ্যুৎ অফিসের কাছে জানতে চাই।’
এ বিষয়ে নেসকোর লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বিক্রয় বিতরন বিভাগের সুত্রে জানা গেছে কালীগঞ্জ উপজেলায় দিন–রাতে বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ৭/৮ মেগাওয়াট।
চাহিদার বিপরীতে অর্ধেক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে এলাকাভেদে লোডশেডিংয়ের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে নানা কারণে সেটিও রক্ষা করা সম্ভব হয়ে উঠছে না।