কালীগঞ্জ(লালমনিরহাট) প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে আত্মীয়তার সু-সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে চেক দিয়ে ১৫ লক্ষ টাকা নেয়ার পর নানা টালবাহানা করার অভিযোগ উঠেছে ভূল্লারহাট বাজারের জিয়া ফার্মেসীর স্বত্বাধিকারী জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে।
জিয়াউর রহমান দক্ষিণ ভোটমারী ৩ নং ওয়ার্ড এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে। সে পাওনা টাকা পরিশোধ না করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তার দোকান ভাংচুর ও টাকা লুটপাটের মিথ্যা গল্পকাহিনী সাজিয়ে ৯ জানুয়ারী জুয়েলকে প্রধান আসামি করে এক ইউপি সদস্যসহ ৮ জনের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী খলিলুর রহমান।
জানা যায়, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাবেক ইউপি সদস্য আজিজ কে সঙ্গে নিয়ে পাওনাদার জুয়েল ভূল্লারহাট জিয়া ফার্মেসীতে পাওনা টাকা চাইতে গেলে জিয়াউর রহমান তার ঔষধের দোকান থেকে বেড়িয়ে এসে গালিগালাজ করে। তার চিৎকারে আশেপাশের ব্যবসায়ীরাসহ পাওনাদার জুয়েলের চাচা আঃ খালেক তাদের ঝগড়া থামাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এসময় জিয়াউর রহমান তার দোকানে থাকা একটি সাইকেলের পাইপ দিয়ে খালেকের মাথায় আঘাত করে। আঘাত করা সেই পাইপটি স্বপন মুন্সির দোকানে আজও জমা রয়েছে। পরে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী লুনা বেগম তার দোকানে থাকা কয়েকটি ঔষধের বক্স মাটিতে ফেলে দেন এবং দোকান ভাংচুর ও টাকা লুটপাটের বিষয়ে ৯৯৯ ফোন দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করেন। ফোন পেয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলা দায়ের করেন।
পাওনাদার জুয়েলের এজাহার সুত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য সাইদুল, খলিলুর,শফিকুল এবং রুকুসহ অনেকের উপস্থিতিতে ব্যবসার প্রয়োজনে জিয়াউর রহমান তার স্বাক্ষরিত জনতা ব্যাংকের দুটি চেক দিয়ে জুয়েলের কাছে ধার হিসেবে ১৫ লক্ষ টাকা গ্রহন করেন। যাহা ৬ মাসের মধ্যে পরিশোধ করার কথা। কিন্তু ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও টাকা না দিয়ে উল্টো টালবাহানা করে আসতেছে।
এ বিষয় পাওনাদার জুয়েল বলেন, একাধিকবার সালিশ বৈঠকে, থানা পুলিশের এসআই তুহিনের কাছে এবং সেলিম চেয়ারম্যানের কাছেসহ বিভিন্ন জনের কাছে টাকা পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেও আজ কাল করে টালবাহানা করছেন। সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর ভরা বাজারে তার দোকানে পাওনা টাকা চাইতে গেলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভাংচুর ও টাকা লুটপাটের একটি মামলা করেন। যাহা সম্পুর্ন মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। সঠিক তদন্ত করলে তার ফার্মেসীতে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ এবং ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের স্টেটমেন্ট চেক করলে প্রমাণ মিলবে ভাংচুর, টাকা লুটপাট ও দাত ভাঙ্গা ঘটনার মুল রহস্য। সঠিক তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান ভুক্তভোগী জুয়েল।
এবিষয় ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম টাকা পাওয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, দুই পক্ষকে নিয়ে ইতিপূর্বে একাধিকবার সমঝোতায় বসা হয়েছিল কিন্তু টাকা পরিশোধ করেনি। ওল্টো আমাকেসহ আসামী করে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দয়ের করেছে।
এ ব্যাপারে জিয়াউর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ব্যস্ততার কথা বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয় কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম গোলাম রসুল উভয় পক্ষের মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।